লেলিহান: জ্বলছে অভিযুক্তের বাড়ি। নিবড়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
পড়শির বাড়ি থেকে কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল সোমবার। অভিযুক্ত গৌতম সিংহকে আটক করে পুলিশ। ঘটনাটি খড়্গপুর-২ ব্লকের। স্থানীয় বাসিন্দা বছর একত্রিশের গৌতমের বাড়ি থেকেই কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের বাবা গৌতমের বিরুদ্ধে পুলিশে মেয়েকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গৌতমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পেশায় রাজমিস্ত্রি গৌতমের বাড়ি খড়্গপুরের মাদপুরের কাছে। দাদা মারা যাওয়ার পরে বৌদিকে বিয়ে করে গৌতম। তাদের তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বছর ছ’য়েক আগে খড়্গপুর-২ ব্লকের গ্রামে ঘরজামাই হয়ে থাকতে শুরু করে গৌতম। ওই গ্রামে নিজের বাড়িও করেছে সে। দিন দু’য়েক আগে মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী বাপের বাড়ি যাওয়ায় বাড়ি ফাঁকাই ছিল।
সোমবার সাইকেল শেখার সময় বাড়ির সামনে থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় ওই কিশোরী। পরিজনেরা তল্লাশি চালানোর সময় গৌতমের বাড়ির খাটের নীচ থেকে ওই নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়দের ধারণা, সাইকেল শেখার সময়ে কোনও প্রলোভন দেখিয়ে ওই বালিকাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় গৌতম। এরপরেই তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। উত্তেজিত এলাকার বাসিন্দারা সোমবার গৌতমকে আটকে রেখে মারধর করে বলেও অভিযোগ। তার বাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এলাকার বাসিন্দা সনাতন বেরার অভিযোগ, “আগে গৌতম নিজেকে বাঁচাতে আরও দু’জনের নাম বলছিল। কিন্তু আমাদের ধারণা ছিল যা করার ও নিজেই করেছে। তাই উত্তেজিত মানুষ ওর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। গ্রামে এই ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। আমরা গৌতমের কঠোর শাস্তি চাই।”
মারধরে জখম গৌতমকে পুলিশ খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার গৌতমকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ওই কিশোরীর দেহও মেদিনীপুর মেডিক্যালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
গৌতমকে আর গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও দাবি এলাকার বাসিন্দাদের। গ্রামের বাসিন্দা শঙ্কর দে বলছেন, “নিজের তিনটি কন্যা সন্তান থাকা সত্ত্বেও মেয়ের বয়সী বালিকাকে ও কী ভাবে ধর্ষণ করল সেটাই আমাদের ভাবাচ্ছে। গৌতমকে আর কখনও গ্রামে ঢুকতে দেব না।”
মেয়ে হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মৃতের বাবা বলছিলেন, “মেয়েকে খুঁজে পেলাম কিন্তু মৃত অবস্থায়। গৌতম আমার মেয়ের সর্বনাশ করে খুন করেছে। আমি ওর ফাঁসি চাই।”
খড়্গপুরের এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল বলেন, “মেয়েটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে গৌতম সিংহের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও তার পরে খুনের মামলা রুজু করেছি। তদন্ত চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy