Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

যুবকের দেহ উদ্ধার, ধোঁয়াশা

দুঃস্থ পরিবারের ছেলে বিশ্বজিৎ বরাবরই চাপা স্বভাবের ছিলেন। তাঁর বড়দা মানসিক ভারসাম্যহীন। ছোট ভাইও বেকার। বিশ্বজিতের রোজগারেই সংসার চলত। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার হঠাৎ কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন ওই যুবক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৩
Share: Save:

বাড়ি থেকে এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল বুধবার। মৃতের নাম বিশ্বজিৎ বসু (২৮)। এ দিন দুপুরে খড়্গপুর গ্রামীণ থানা এলাকার তালবাগিচার দীনেশনগরে বাড়িতে বিশ্বজিতের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান মা পুষ্পরানি বসু। মৃতের পরিজনেদের দাবি, লালবাজারের সাইবার ক্রাইম শাখা থেকে তাঁর নামে একটি সমন আসার পর থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন বিশ্বজিৎ। তবে কী কারণে এই সমন এসেছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। এই কারণেই বিশ্বজিৎ আত্মঘাতী হয়েছেন কি না তা নিয়েও ধোঁযাশা রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক। একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়েছে।

সমনের বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি করেছেন খড়্গপুরের এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল। লালবাজারের পুলিশ আধিকারিকরাও এ বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি।

দুঃস্থ পরিবারের ছেলে বিশ্বজিৎ বরাবরই চাপা স্বভাবের ছিলেন। তাঁর বড়দা মানসিক ভারসাম্যহীন। ছোট ভাইও বেকার। বিশ্বজিতের রোজগারেই সংসার চলত। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার হঠাৎ কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন ওই যুবক। পরে বাড়িতে ফোন করে তিনি জানান, তাঁর ফিরতে দেরি হবে। কী কারণে তিনি কলকাতা গিয়েছেন তা জানতে জেঠতুতো ভাই দীপান বসু বিশ্বজিৎকে ফোন করেন। ফোনে বিশ্বজিৎ জানান, গত ২৪ জুলাই লালবাজারের সাইবার ক্রাইম শাখা থেকে তাঁর নামে একটি সমন এসেছে। সমনে তাঁকে দ্রুত লালবাজারে দেখা করতে বলা হয়েছে। সেই জন্যই তিনি কলকাতা যাচ্ছেন।

সব শুনে দীপান তাঁকে খড়্গপুরে ফিরে আসতে বলেন। ভাইয়ের কথা মতো বিশ্বজিৎ লালবাজারে না গিয়ে হাওড়া থেকেই ফের খড়্গপুরে ফিরে আসেন। দীপানবাবু বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি শুনে আমি বিশ্বজিৎকে খড়্গপুরে ফিরে আসতে বলি। পরে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে লালবাজারে যাওয়ার কথাও বলেছিলাম।’’ যদিও তাঁর দাবি, ‘‘কী কারণে লালবাজারের সাইবার ক্রাইম শাখা থেকে সমন এসেছিল বিশ্বজিৎ তাঁকে সেটা জানাননি।”

কলকাতা থেকে ফিরে মঙ্গলবার রাতে খড়্গপুরের বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে জেঠুর বাড়িতেই ছিলেন বিশ্বজিৎ। পরে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। এ দিনই বাড়ির ঘরের কড়িকাঠে বিশ্বজিতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। দীপানের কথায়, “গভীর রাতে আমাদের কিছু না জানিয়েই ও নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়েছিল। খুব দুশ্চিন্তায় ভুগছিল। কিন্তু ও এমন ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবে এটা ভাবতে পারছি না।” বিশ্বজিতের মা পুষ্পাদেবীও বলছেন, ‘‘লালবাজার থেকে ছেলেকে ডেকে পাঠিয়েছিল। কলকাতা থেকে ও ফিরে আসার পরে সে কথা জানতে পারি। বিশ্বজিৎ আমাদের সব কথা না বললেও খুব চিন্তায় ছিল। তবে ও এভাবে চলে যাবে বুঝিনি। ’

বিশ্বজিতের ভাই শুভজিৎ বসুও বলছেন, “দাদা আমাদের কিছু বলত না। ওঁর মোবাইলেও হাত দিতে দিত না। মনে হচ্ছে ইন্টারনেটে দাদা হয়তো এমন কিছু পোস্ট করেছিল যার জন্য ওকে লালবাজার থেকে ডেকেছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE