মশার-আঁতুড়ঘর: নোংরা নর্দমা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ=
ম্যালেরিয়া রুখতে একযোগে কাজ শুরু করছে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতর। আজ, ১ মে থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার শুরু করছে পুরসভাগুলি। ঘাটাল-সহ ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি পুরসভাই এই পদক্ষেপ করছে। বাসিন্দারা যাতে পুরসভা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায্য করেন, তাঁদের পরামর্শগুলি মেনে চলেন, সে জন্য আর্জি জানিয়ে মাইকে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে আগেই। ওই সব পুরসভার চেয়ারম্যানেরা প্রায় সকলেই বলেছেন, নবান্নের নির্দেশেই বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরাও বলেন, “বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছ থেকে লিফলেট নিয়ে একবার চোখ বুলিয়ে নিন।”
ঝাড়গ্রাম পুরসভার তরফে ৩৪ জনের একটি দল গঠন করা হয়েছে। শহরের ১৮ টি ওয়ার্ডে টহল দেবেন তাঁরা। প্রতিটি বাড়িতে যাবেন দু’জন করে সদস্য। কোথাও জল জমে রয়েছে কিনা, বাড়ির আশপাশে জঞ্জাল রয়েছে কিনা বা বাড়িতে কারও জ্বর আছে কিনা—তা খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। এরকম চারটি দল পিছু একজন করে সুপারভাইজার থাকছেন। এক একটি দল শহরের ৭০টি করে বাড়ি ঘুরে দেখবেন। সারাদিনে যা তথ্য পাওয়া যাবে তা এসএমএস মারফত স্বাস্থ্য ভবনের মূল সার্ভারে পাঠিয়ে দেবেন ওই প্রতিনিধিরা। স্বাস্থ্য ভবন থেকে আবার স্বাস্থ্য দফতরকে ও পুরসভাকে এসএমএস করেই জানানো হবে।
জ্বরের খবর পেলেই স্বাস্থ্য দফতরের লোকজন গিয়ে বাড়ি থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করবেন। কোথাও জমা জল বা জঞ্জালের খবর থাকলে পুরসভা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করবে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এই প্রকল্পে কাজ চলবে। প্রতি মাসে দু’বার এই অভিযান হবে।
১ মে থেকে ৫ মে প্রথম পর্যায়ে এবং ১৬ থেকে ২০ মে পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম পুরসভায় এই কাজ চলবে। ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝি বলেন, ‘‘রোগের জীবাণুবাহক মশারা চরিত্র বদল করেছে। ফলে এখন আর শুধু মশারি টাঙ্গিয়ে লাভ হবে না। মশা যাতে জন্মাতেই না পারে, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’’ সে জন্যই তাঁরা আবেদন করছেন বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখতে।
তবে এতে যে খুব আশ্বস্ত হচ্ছেন বাসিন্দারা, তা নয়। ঝাড়গ্রাম শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুখেন্দু বেরা বলেন, ‘‘বাড়ি পরিষ্কার রাখতে বলে কি তেমন লাভ হবে? ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝখানে যে নোংরা নর্দমা রয়েছে সেটা কে পরিষ্কার করবে?’’ ১৫ ওয়ার্ডের বাসিন্দা মনোরঞ্জন কাটারি বলেন, ‘‘পাড়ার জঞ্জাল পরিষ্কার করা হয় বছরে দু’বার— শহরে মুখ্যমন্ত্রী এলে আর পুজোর সময়। দুর্গন্ধের টেঁকা দায়। রাস্তার পাশের একটা ডোবা ডাস্টবিন হয়ে গিয়েছে। পুরসভা তো কিছুই করেনি এতদিন!’’
তবে পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব দাবি করেছেন, বাসিন্দাদের সচেতনতার অভাবেই নোংরা হচ্ছে এলাকা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ১৮টি ওয়ার্ডেই নিয়মিত সাফাই করে থাকি। কিন্তু বাসিন্দারা আমাদের দেওয়া ডাস্টবিন ব্যবহার করেন না। যত্রতত্র নোংরা ফেলেন। এইটুকু সচেতনতা না থাকলে কী ভাবে পুরসভা পদক্ষেপ করবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy