Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

পথের বলি ৪১৮, রাশ নেই দুর্ঘটনায়

মাস খানেক আগে খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায় মেদিনীপুরের যুবক রবীন পাল হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালাতে গিয়ে কালভার্টে ধাক্কা মারেন। মাথায় প্রচুর রক্তক্ষরণের জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের।

দাঁড়ি পড়ছে না দুর্ঘটনায় — ফাইল চিত্র।

দাঁড়ি পড়ছে না দুর্ঘটনায় — ফাইল চিত্র।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪২
Share: Save:

মাস খানেক আগে খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায় মেদিনীপুরের যুবক রবীন পাল হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালাতে গিয়ে কালভার্টে ধাক্কা মারেন। মাথায় প্রচুর রক্তক্ষরণের জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের।

হেলমেটবিহীন বাইক চালকেরা এ ভাবে হামেশাই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন। ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ স্লোগান সামনে রেখে পথ নিরাপত্তায় জোর দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চালু হয়েছে হেলমেট বিধি। এত কিছুর পরেও অবশ্য পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে রাশ টানা যাচ্ছে না।

জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, ২০১৬ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরে পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭৬২টি। সব মিলিয়ে মারা গিয়েছেন ৪১৮ জন, জখম ৮২১। গত কয়েক বছরের তুলনায় দুর্ঘটনা বেড়েছে। সাধারণত জেলায় বছরে গড়ে ৬৫৪টি পথ দুর্ঘটনা ঘটে। মারা যান গড়ে ৩৩৯ জন, জখম গড়ে ৭১৫ জন। পুলিশের একাংশের যুক্তি, এখন গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। অল্পবয়সী ছেলেরা বাইক নিয়ে দাপাচ্ছে। ফলে, দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে।

তবে জেলা পুলিশের এই কর্তার মানছেন, হেলমেট-বিধি চালু হওয়ার পরে জেলায় যে ধরপাকড় শুরু হয়েছিল, এখন তাতে ভাটার টান। ফলে, মানুষের সচেতনতা কমে গিয়েছে। হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো, স্টিয়ারিংয়ে হাত রেখে মোবাইলে কথা বলা, অনাবশ্যক দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো— সবই চলছে আগের মতো। তাই জেলার কোনও না কোনও সড়কে রোজই দুর্ঘটনা ঘটছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে ৬ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ১৮৮.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই দু’টি জাতীয় সড়কই সব থেকে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ। বিশেষ করে, জাতীয় সড়কের কয়েকটি এলাকা যেন ‘মৃত্যু-ফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। পিচ উঠে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে।

পরিস্থিতি দেখে পথ নিরাপত্তা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগী হচ্ছে পুলিশ। সচেতনতার জন্য মেদিনীপুরের সমস্ত স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে এক কর্মসূচি করারও পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের বক্তব্য, “একটা লোকের হাত কিংবা পা দুর্ঘটনায় চলে গেলে তাঁর পরিবার ভীষণ কষ্ট পায়। তাঁর রুজিরোজগার বন্ধ হয়ে যায়। এটা সকলকে বুঝতে হবে।’’ পুলিশের এক সূত্র জানাচ্ছে, ৬ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকাগুলিকে ‘ব্ল্যাক স্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Regular Accident District
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE