Advertisement
১১ মে ২০২৪

প্রশিক্ষক নেই, এনসিসি প্রশিক্ষণ বন্ধ অনেক স্কুলে

কোথাও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষক নেই আবার কোথাও বন্ধই হয়ে গিয়েছে ‘ন্যাশেনাল ক্যাডেট কর্প’ (এনসিসি)-র শাখা। ফলে আগ্রহ থাকলেও জাতীয় সামরিক শিক্ষার্থী বাহিনী বা এনসিসি-র প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন না অনেক পড়ুয়া।

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ০১:৩০
Share: Save:

কোথাও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষক নেই আবার কোথাও বন্ধই হয়ে গিয়েছে ‘ন্যাশেনাল ক্যাডেট কর্প’ (এনসিসি)-র শাখা। ফলে আগ্রহ থাকলেও জাতীয় সামরিক শিক্ষার্থী বাহিনী বা এনসিসি-র প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন না অনেক পড়ুয়া।

প্রথাগত শিক্ষার ফাঁকে নিছক আগ্রহ থেকেই অনেক পড়ুয়া এনসিসি-র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। অতীতে অনেক পড়ুয়া এনসিসি প্রশিক্ষণ নিয়ে সামরিক বাহিনীতেও যোগ দিয়েছেন। এনসিসি প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রতিটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে ২ জন করে ‘অ্যাসোসিয়েট এনসিসি অফিসার’ (এএনও) থাকেন। তাঁরাই মূলত পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ দেন। স্কুল শিক্ষকদের মধ্যে থেকেই দু’জনকে তিনমাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে এএনও হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। অভিযোগ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক না মেলায় অনেক স্কুলেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে এনসিসি শাখা।

খড়্গপুরের ইন্দা কৃষ্ণলাল বালক স্কুলে আগে এনসিসি-র শাখা ছিল। স্কুলের অনেক পড়ুয়া প্রশিক্ষণ নিয়ে সামরিক বাহিনীতে চাকরিও পেয়েছেন। যদিও বছর পাঁচেক আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে এনসিসি প্রশিক্ষণ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থ ঘোষ বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত একজন প্রশিক্ষক এনসিসি প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। কিন্তু প্রশিক্ষক না মেলায় স্কুলে যিনি প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি ৬০ বছর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও প্রশিক্ষক না মেলায় আমরা এনসিসি শাখা বন্ধ করে দিয়েছি।” শহরের অন্ধ্র হাইস্কুলেও বছর ছ’য়েক ধরে বন্ধ এনসিসি শাখা। এক সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক এনসিসি প্রশিক্ষণ শাখা পরিচালনা করতেন। কিন্তু তিনি অবসর নেওয়ার পর ওই শাখা উঠে যায়। এরপরে নতুন করে স্কুলে এনসিসি শাখা খোলার জন্য আবেদন করা হলেও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আর সাঁই শ্রীধর বলেন, “আমার আগের প্রধান শিক্ষক অবসরগ্রহণের পরে স্কুলের এনসিসি শাখা বন্ধ হয়ে যায়। পড়ুয়াদের আগ্রহ দেখে আমরা বছর তিনেক আগে খড়্গপুরে এনসিসি অফিসে আবেদন করি। কিন্তু এখনও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক পাওয়া যায়নি।” সিলভার জুবিলি হাইস্কুল, হিজলি হাইস্কুল, ছত্তীসগঢ় হাইস্কুলে অবশ্য এখনও চলছে এনসিসি প্রশিক্ষণ। তবে সেখানেও নানা সমস্যা। সিলভার জুবিলি হাইস্কুলে একজন প্রশিক্ষক। পরিস্থিতি এমন যে এনসিসি শাখা বন্ধ করে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক শিতিকন্ঠ দে।

ছত্তীসগঢ় হাইস্কুলেও এক পরিস্থিতি। ২০০৯ সালে এই স্কুল উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হলেও এনসিসি-র সিনিয়র ডিভিশন শাখা খোলা হয়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলোক সিংহ বলেন, “একজন প্রশিক্ষক (এএনও) দিয়ে এনসিসি শাখা চালাতে হচ্ছে। তবে ২০০৯ সালে স্কুল উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হলেও আর কোনও এএনও পাইনি।” হিজলি হাইস্কুলে এনসিসি শাখা ভাল ভাবে চলছে। স্কুলের প্রায় তিনশো জন পড়ুয়া দু’জন প্রশিক্ষকের অধীনে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। যদিও এই স্কুলে প্রশিক্ষণরত পড়ুয়াদের এনসিসি-র পোশাক না মেলার অভিযোগ উঠেছে। এনসিসি-র ২৫ নম্বর ব্যাটালিয়ানের খড়্গপুর শাখার আধিকারিক ভীম ভাণ্ডারি বলেন, “পোশাক না পাওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।’’ আর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের সমস্যা জানালে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

schools trainers NCC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE