Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কাজে গতি আনতে জোর সমন্বয়েই

বুধবার সকাল ১০টায় প্রশাসনিক বৈঠক শুরু হয়। বিকেল ৫টায় শেষ হয়। বৈঠকে দুই জেলার বিডিও, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বিভিন্ন দফতরের পদস্থ আধিকারিকেরাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪১
Share: Save:

প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় না থাকা নিয়ে ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, সমন্বয়ের অভাবেই বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রাম থেকে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই মেদিনীপুর শহরের কালেক্টরেটে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হল বুধবার। বৈঠকে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা ও ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুন দু’জনেই বুঝিয়ে দেন, ভাল ভাবে সমন্বয় রেখে কাজ এগোতে হবে। নিয়মিত কাজের পর্যালোচনা করতে হবে। তবেই কাজে আরও
গতি আসবে।

প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার সকাল ১০টায় প্রশাসনিক বৈঠক শুরু হয়। বিকেল ৫টায় শেষ হয়। বৈঠকে দুই জেলার বিডিও, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বিভিন্ন দফতরের পদস্থ আধিকারিকেরাও। এক-এক করে সমস্ত দফতরের কাজকর্মেরই পর্যালোচনা হয়। শুরুতে মিশন নির্মল বাংলা এবং জেলা পরিষদের আরও কিছু কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর জঙ্গলমহল অ্যাকশন প্ল্যান, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ, বিধায়ক তহবিল, সাংসদ তহবিল নিয়ে আলোচনা হয়। পরে একে একে যুবকল্যাণ দফতর, শিক্ষা দফতর, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতর, গ্রামোন্নয়ন দফতর, একশো দিনের কাজ প্রকল্প, স্বসহায়ক দল, মিড ডে মিল, সংখ্যালঘু উন্নয়ন, পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন, কন্যাশ্রী, প্রভৃতি প্রকল্প এবং দফতরের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের এক কর্তার স্বীকারোক্তি, “কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাব ছিল। ফলে, কাজ এগোতে সমস্যা হচ্ছিল। বেশি সময় লাগছিল। আশা করি, এ বার আর তা থাকবে না।” তাঁর কথায়, “বৈঠকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে। কাজ এগোতে কোথাও কোনও সমস্যা হলে আলোচনায় বসতে হবে। প্রয়োজনে একাধিকবার বসতে হবে। মানুষের মতামত শুনতে হবে। সেই মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতেও হবে।”

ব্লক ধরে ধরে কোন প্রকল্পের কাজ কতদূর এগিয়েছে তা দেখা হয়। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে প্রতি ব্লক আড়াই কোটি টাকা পেয়েছে। বরাদ্দ অর্থে প্রস্তাবিত কাজ দ্রুত শেষ করার কথা জানানো হয়। ঝাড়গ্রামে ৮টি কর্মতীর্থ হওয়ার কথা। এরমধ্যে ৫টি চালু হয়েছে। বাকি ৩টি শীঘ্রই চালু করার কথা জানানো হয়। একশো দিনের কাজে কয়েকটি ব্লক পিছিয়ে রয়েছে। কোথাও ৩০, কোথাও ৩২ দিন কাজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। একশো দিনের কাজে গতি আনার কথা জানানো হয়। সড়ক যোজনার কাজও খুব খারাপ হচ্ছে কয়েকটি ব্লকে। এই কাজের উপর আরও নজরদারি বাড়ানোর কথা জানানো হয়।

গত এপ্রিলে ঝাড়গ্রাম জেলা গঠন হয়েছিল। নতুন জেলা গঠনের পরে গত ৯ অক্টোবরই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামে আসেন। গত কয়েক মাসে ঝাড়গ্রামের আদিবাসী-মূলবাসীদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভের চোরাস্রোত এসেছে। আদিবাসীদের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গলমহলে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেও শাসক দলের দাবি। পরিস্থিতির কথা অজানা নয় মুখ্যমন্ত্রীর। বৈঠকে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘জঙ্গলমহল খুব সেনসিটিভ। আমি কোনও অভিযোগ শুনতে চাই না। মানুষের সমস্যা হলে ডেকে মেটাতে হবে।’ এরপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। আগেই ঝাড়গ্রামে এক বৈঠক হয়েছে। এ বার মেদিনীপুরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হল। জেলা প্রশাসনের আশা, এ বার ঝাড়গ্রামের উন্নয়নের কাজে আরও গতি আসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE