ভরসা: —নিজস্ব চিত্র।
কুড়িটা বছর কেটে গিয়েছে। কেউ কথা রাখেনি।
পুরভোটে পানীয় জলের সমস্যা প্রসঙ্গে হলদিয়া পুর এলাকার বাসিন্দাদের মুখে মুখে এমন কথাই ফিরছে। শহরবাসীর অভিযোগ, বাম আমলের ১৭ আর তৃণমূলের তিন বছরে পানীয় জলের সমস্যা মেটানো নিয়ে কারও কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি। অথচ ভোট এলেই বন্যা বয়েছে প্রতিশ্রুতির। পুর পরিষেবার অন্যতম প্রধান পানীয় জল। অথচ আজ পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি তা পৌঁছে দেওয়ার কথা কি বাম, কি তৃণমূল কোনও পুরসভাই ভাবেনি। এখনও বহু ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের ভরসা নলকূপ কিংবা দূর থেকে বয়ে আনা জল।
হলদিয়া পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ড। হলদি নদীর গা ঘেঁষে থাকা এই ওয়ার্ডের রায়রায়চক এলাকায় প্রায় সাতহাজার ভোটার। ওয়ার্ডে কোনও নলবাহিত পানীয় জলের সরবরাহ নেই। ভরসা নলকূপ। তাও আবার একাধিক জায়গায় খারাপ। ফলে বাসিন্দাদের বাধ্য হয়ে দূর থেকে জল আনতে হয়। এই এলাকায় এবার প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূলের দীপক পন্ডা। তিনি জানান, মানুষের নলবাহিত পানীয়জলের দাবি রয়েছে। টানা চারবার বামেরা এখানে ক্ষমতায় থাকলেও পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা করেনি। প্রচারে তাই বিশুদ্ধ পানীয় জল দেওয়ার প্রতিশ্রুতির কথাই বলছেন দীপক।
হলদিয়া পুরসভায় ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষণ জায়া তমালিকা পণ্ডার নেতৃত্বে ক্ষমতায় ছিল বামেরা। সেই সময় থেকে এ যাবৎ অর্থাৎ তৃণমূলের জমানায় ৩ বছর ৮মাস পেরিয়ে গেলেও পানীয় জলের চাহিদা পূরণ হয়নি রাজার চক ও রায়রায়চকের মানুষের। স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম বেরা বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় জলের কষ্ট রয়েছে। বাড়ি বাড়ি পানীয় জল চাই আমাদের।’’ একই অবস্থা আরও অনেক ওয়ার্ডেরও। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গাচক এলাকায় বিজেপির প্রার্থী কেকা গুড়িয়ার অভিযোগ, পানীয় জল কোথাও কোথাও থাকলেও তা পানের অযোগ্য। এতদিন ক্ষমতায় থাকলেও বাম বা তৃণমূল কেউই পানীয় জল নিয়ে কিছু করেনি।
যদিও বিরোধীদের অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল। পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘বামেরা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলেও কিছুই করেনি। আমরা পুরো মেয়াদ থাকিনি। তবু তারই মধ্যে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ করার কাজে।’’ তিনি জানান, জলসরবরাহ প্রকল্প অম্রুতে ২৪৬ কোটি টাকা মঞ্জুর হয়েছে। হলদিয়া পুরসভার জন্য ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পুর এলাকার প্রতিটি বাড়িতে জল সরবরাহ করার লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে । এই প্রকল্পে ১ লক্ষ ৭৩ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন।
যদিও ভুক্তভোগী পুরবাসীর আশঙ্কা, ভোটের আগে এটাও কথার কথা নয় তো!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy