Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বামকে হটিয়ে প্রধান বিরোধী হল বিজেপি

বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ভোটের ফলে স্পষ্ট হয়ে যায় জেলায় এ বার অধিকাংশ পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রধান বিরোধী হিসেবে স্থান দখল করতে চলেছে বিজেপি।

জয়োল্লাস: কোলাঘাটের ভোগপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি আসনে জয় লাভের পর বিজেপি সমর্থকদের উল্লাস। নিজস্ব চিত্র

জয়োল্লাস: কোলাঘাটের ভোগপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি আসনে জয় লাভের পর বিজেপি সমর্থকদের উল্লাস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৮ ০০:৪৪
Share: Save:

আভাস মিলেছিল আগেই। গত বছর দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের জয়ের পাশাপাশি প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে বামেদের সরিয়ে উঠে এসেছিল বিজেপি। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় তৃণমূলের বিপুল জয়ের পাশাপাশি পঞ্চায়েতে জয়ী আসন সংখ্যার নিরিখে শাসকদলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে এল সেই বিজেপিই।

বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ভোটের ফলে স্পষ্ট হয়ে যায় জেলায় এ বার অধিকাংশ পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রধান বিরোধী হিসেবে স্থান দখল করতে চলেছে বিজেপি। তবে কয়েকটি পঞ্চায়েত বামেরা দখল করলেও বিজেপি দখল করেছে মাত্র একটি। রামনগর-১ ব্লকের তালগাছাড়ি পঞ্চায়েত। আসন সংখ্যার নিরিখেও শাসকের ধারেকাছেই নেই বিরোধী বিজেপি এবং বামেরা।

জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের হিসেবে পূর্ব মেদিনীপুরে ৩৩৭৮টি পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৭৮৬টি আসনে তৃণমূল ছাড়া কোনও বিরোধী প্রার্থীর মনোনয়ন জমা পড়েনি। ফলে ওই সব আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পথ মসৃণ করেছিল তৃণমূল। বাকি ২৫৯২টি আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়। বৃহস্পতিবার ফল বেরোলে দেখা যায়, তৃণমূল ১৯২৫টি আসনে জিতে জেলায় একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করেছে। বিরোধী বিজেপি পেয়েছে ১৭২টি আসন। বামফ্রন্ট পেয়েছে ১৪৮টি ও কংগ্রেস ১৫টি আসন। নির্দলরা জয়ী হয়েছে ১৮২টি আসনে। অর্থাৎ আসন সংখ্যার নিরিখে তৃণমূলের পরেই জেলায় দ্বিতীয় বিজেপি। ২০১৩ পঞ্চায়েত নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বামেরা নেমে গিয়েছে তৃতীয় স্থানে। সেবার তৃণমূল পেয়েছিল ১৭৮৪টি আসন। বামফ্রন্ট পেয়েছিল ১০১৪ টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছিল ১৩৭টি ও নির্দল ২২৮টি। বিজেপির ভাগ্যে জুটেছিল মাত্র ১৬টি আসন।

তবে এ বার প্রধান বিরোধী হিসাবে উত্থান হলেও প্রত্যাশা মত ফল হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাস বলেন, ‘‘মহিষাদল, কোলাঘাট ও তমলুক ব্লকে তুলনামূলক ভাল হলেও জেলার বাকি ব্লকগুলিতে আশানুরূপ ফল হয়নি। তৃণমূলের সন্ত্রাস সত্ত্বেও এমন ফলে স্পষ্ট, জেলার মানুষ আমাদের পক্ষে আছেন। সাংগঠনিক দিক থেকেও আমরা এগিয়েছি।’’

দলের এমন অবস্থা নিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির যুক্তি, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে আমাদের বহু প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি। ফলে জেলার বহু জায়গাতেই আমাদের সমর্থকরা তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। ভোটের ফলে জেলাবাসীর প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন হয়নি।’’

জেলায় বিজেপির দ্বিতীয় স্থান নিয়ে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা জেলার তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘এই নির্বাচনে জেলার ৬০ শতাংশের বেশি মানুষ আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন। বিজেপি ও বামফ্রন্টের দিকে মানুষের সমর্থন খুবই নগণ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Elections 2018 BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE