Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অসমের নিখোঁজ কিশোরকে ঘরে ফিরিয়ে দিল ইন্টারনেট 

দুর্গাচক থানার ওসি অমিত কুমার দেব বলেন, ‘‘ছেলেটি ঠিকমত কথা বলতে পারছিল না। বললেও ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না। ওকে থানায় নিয়ে এসে খাইয়ে দাইয়ে ধীরে সুস্থে জিজ্ঞাসা করার পর ওর বাড়ির সোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।’’  

নিশ্চিন্ত: দুর্গাচক থানায় নিখোঁজ সাহিল। ছবি: কেশব মান্না

নিশ্চিন্ত: দুর্গাচক থানায় নিখোঁজ সাহিল। ছবি: কেশব মান্না

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১৩
Share: Save:

নামধাম জানতে চাওয়া হলে কিছুই বলতে পারছে না। শুধু মুখে একটা শব্দ করে যেটা বলতে চাইছে, বেশ কিছুক্ষণ খেয়াল করার পর বোঝা গেল সেটা ‘গড়কুল্লা’। আধো বাংলায় উচ্চারিত এই শব্দকে সম্বল করেই নিখোঁজ নাবালককে ঘরে ফেরানোর চেষ্টায় হলদিয়ার দুর্গাচক থানার পুলিশ।

বুধবার রাত আটটা নাগাদ দুর্গাচক স্টেশন এলাকায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে বছর তেরোর এলাকায় ঘুরছিল ওই নাবালক। সে সময় পুলিশের টহলদারি জিপ তাকে দেখতে পায়। নামধাম কিছু বলতে না পারায় তাকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বার বার নানা ভাবে জিজ্ঞাসা করা হলেও নিজের নাম, বাড়ির ঠিকানা কিছুই বলতে পারছিল না ওই নাবালক। খালি ‘গড়কুল্লা’ বলে একটা শব্দ উচ্চারণ করছিল সে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও উপায় না পেয়ে ইন্টারনেটে গড়কুল্লা শব্দ লিখে খোঁজ শুরু হয়। সেখানে দেখা যায় অসমের শিবসাগর জেলার শিমুলগুড়ি থানা এলাকায় গুড়মুল্লা নামে একটা গ্রাম রয়েছে। এরপর দুর্গাচক থানার পুলিশ সেখানকার পুলিশকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদের মারফত জানা যায় নিখোঁজ কিশোরের নাম সাহিল। হদিস মেলে তার বাড়িরও। এর প আরও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাহিলের বাবার আলুর ব্যবসা রয়েছে।

কিন্তু কী ভাবে হলদিয়ায় পৌঁছল সাহিল?

দুর্গাচকের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যে নাগাদ ওই কিশোর হাওড়া-হলদিয়া লোকাল ট্রেন থেকে দুর্গাচক স্টেশনে নামে। আধো বাংলায় সে জানায় হাওড়া থেকে সে ওই ট্ট্রেনে চেপেছিল। পরে তাকে বার বার জিজ্ঞাসা করে অনেক কষ্টে বোঝা যায় মাস দুয়েক ধরে সে বিভিন্ন জায়গায় ট্রেনে ঘুরেছে। নিউজলপাইগুড়িতেও গিয়েছিল। কাছে টাকাপয়সা না থাকায় ঠিকমতো খাওয়াও জোটেনি। এরপরেই ওই ব্যবসায়ীরা পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

দুর্গাচক থানার ওসি অমিত কুমার দেব বলেন, ‘‘ছেলেটি ঠিকমত কথা বলতে পারছিল না। বললেও ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না। ওকে থানায় নিয়ে এসে খাইয়ে দাইয়ে ধীরে সুস্থে জিজ্ঞাসা করার পর ওর বাড়ির সোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।’’

হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওখানকার পুলিশের সাহায্যে সাহিলের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাহিলকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বাড়ির লোকজন এসে না পৌছনো পর্যন্ত সাহিলকে সমাজ কল্যাণ দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Boy Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE