অপেক্ষা: মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে, মঙ্গলবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
চোখের চিকিৎসা করাতে চন্দ্রকোনার ঝাঁকরা থেকে বাসে চেপে মেদিনীপুরে এসেছিলেন চণ্ডী ঘোষ। মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুরে আসার সময় খুব একটা সমস্যা হয়নি। কিন্তু চিকিৎসককে দেখিয়ে পরে বাড়ি ফেরার বাস ধরতে গিয়ে প্রায় দু’ঘণ্টা বসে থাকতে হল চণ্ডীবাবুকে। তাঁর মতো অনেকেই এ দিন মেদিনীপুর বাসস্যান্ডে বাস ধরতে এসে সমস্যায় পড়ছেন। ভুগতে হয়েছে অফিস যাত্রী ও ও স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদেরও। জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের জেরেই এই দুর্ভোগ।
আজ, বুধবার জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণ হবে বাঁকুড়ার খাতড়াতে। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার প্রতিযোগীদের সেই অনুষ্ঠানে নিয়ে যেতে প্রায় ছ’শো বাস সোমবারই নিয়ে নিয়েছে প্রশাসন। জেলার এক পরিবহণ আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রায় ৮০০ বাসের মধ্যে ৬০০ বাস নেওয়া হয়েছে।’’ ফলে, এ দিন রাস্তায় বাস নেমেছে হাতে গোনা। ভেঙে পড়েছে পরিবহণ ব্যবস্থা। সুযোগ বুঝে অটো চালকেরা বাড়তি ভাড়া হেঁকেছেন। কেউ আবার বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। যেমন, কেশপুরের ঝেঁতলা গ্রামের রেণুকা চৌধুরীর বড় ছেলে হলদিয়ায় থাকেন। এ দিন সকালে হলদিয়া থেকে মেদিনীপুরে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু মেদিনীপুর থেকে কেশপুরগামী বাস পাননি। রেণুকাদেবী বলছিলেন, ‘‘দেড় ঘন্টা বসে থাকার পরে বাড়িতে ফোন করলাম। ছোট ছেলে গাড়ি ভাড়া করে মেদিনীপুরে আমাকে নিতে আসছে। ১৫ টাকা বাস ভাড়ার বদলে ৫০০ টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করতে হয়েছে।’’
চন্দ্রকোনার বাসিন্দা দীপঙ্কর চক্রবর্তীর মামা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি। সকালে তিনিও মেদিনীপুরে এসেছিলেন। এবং ফেরার সময় দীর্ঘক্ষণ বাসস্ট্যান্ডে বসে থেকেও বাসের দেখা পাননি। বাধ্য হয়ে অটো ভাড়া করে বাড়ি ফিরছেন। বিভিন্ন কলেজে ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পরীক্ষা চলছে। তাই বাস না থাকায় সমস্যায় পড়েছেন ছাত্রছাত্রীরাও। ‘সারা বাংলা পরিবহণ যাত্রী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক প্রভঞ্জন জানা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান ঠিক করার আগে মানুষের এই সমস্যার কথা ভাবা উচিত ছিল।’’
সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতিও। তিনি বলেন, ‘‘বাসের সংখ্যা কম থাকায় সাধারণ মানুষের সমস্যা হচ্ছে। তবে যে বাসগুলি রাস্তায় নেমেছে সেগুলি যথাসময়ে চালানোর চেষ্টা করছি।’’ আজ, বুধবারই বাঁকুড়ায় অনুষ্ঠান। ফলে, আজও বাস-দুর্ভোগ চলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy