গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশে জয়ের পর এ রাজ্যে বিজয় মিছিল বের করেছে বিজেপি। আর তার পরেই বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
সোমবার রাতে দাসপুর থানার নাড়াজোল সংলগ্ন হরিরাজপুর গ্রামের তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৭জন জখম হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দু’জনের আঘাত গুরুতর। আহতদের নাড়াজোল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। একজনকে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
দু’পক্ষই লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। যদিও মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। ঘটনার পরই হরিরাজপুরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। খবর পেয়েই রাতেই দাসপুর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ দিনও এলাকা উত্তপ্ত ছিল। গোলমাল এড়াতে শুরু হয়ছে পুলিশি টহল।
পুলিশ ও বিজেপি সূত্রের খবর, সোমবার গুজরাত এবং হিমাচল প্রদেশের ভোটে বিজেপির ভাল করার খবর প্রকাশ হতেই এদিন রাতে হরিরাজপুরে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা একটি মিছিল বের করেন। পাশাপাশি চকোলেট বোম, পটকা, আতসবাজিও ফাটানো হয়। রাতে ছিল মাংস-ভাতের আয়োজন।
অভিযোগ বিজেপি কর্মীরা আতসবাজি ফাটিয়ে দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু করেন। সেই মিছিলেই বাঁশ, লোহার রড নিয়ে হামলা চালায় তৃণমূলের লোকজন। তৃণমূল বিধায়ক মমতা ভুঁইয়ার ছেলে যুব নেতা কুমারেশ ভুঁইয়ার নেতৃত্বে হামলা চালানো হয় বলে বিজেপির অভিযোগ।
বিজেপির হরিরাজপুর বুথ সভাপতি নব জানা-সহ ১০ জন দলীয় কর্মী জখম হয়েছেন। বিজেপির বুথ অফিসেও হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ।
যদিও তৃণমূলের বক্তব্য, সোমবার দলীয় সভা সেরে তৃণমূল কর্মীরা বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁদের লক্ষ্য করে বিজেপি সমর্থকেরা চকোলেট বোম ছোড়েন। প্রতিবাদ করলে গালিগালাজ শুরু করা হয়। দু’পক্ষের হাতাহাতিতে তৃণমূলেরও সাতজন জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁরা নাড়াজোল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি।
তৃণমূলের দাসপুর-১ ব্লক সভাপতি সুকুমার পাত্র বলেন, “এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বললেই পুলিশ প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবে।”
যদিও বিজেপির ঘাটাল জেলা সভাপতি রতন দত্তের সাফ বক্তব্য, “আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে শাসকের লোকজন হামলা চালায়। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে বড়সড় আন্দোলনে নামবে বিজেপি়।’’
আবার ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল ব্লকে বিজেপির নেতাদের মারধর ও অপরহণ করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে স্থানীয় রগড়া অঞ্চলের কুকড়াখুপি এলাকার ঘটনা। অভিযোগ, সোমবার সন্ধ্যায় কুচলাদাড়িতে বৈঠক সেরে মোটর বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন বিজেপির রোহিণী মণ্ডল সহ-সভাপতি তপন পৈড়া ও বিজেপির নেকড়াশোল বুথ কমিটির সভাপতি শ্রীমন্ত কামিল্যা। সে সময় তৃণমূলের লোকজনকে সাত-আটটি বাইকে করে এসে তাঁদের ঘিরে মারধর করে। গুরুতর জখম শ্রীমন্তবাবুকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
বিজেপির দাবি, তপনবাবুকে অপহরণ করে তৃণমূলের রগড়া পার্টি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁর কাছ থেকে নগদ কয়েক হাজার টাকা ও হেলমেটও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিজেপির রোহিনী মণ্ডল সভাপতি সুধাংশু রাউত বলেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বিজেপি নেতা-কর্মীদের অপহরণ করে টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছে ও মারধর করছে।’’
ঘটনার কথা অস্বীকার করে সাঁকরাইল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন পট্টনায়েক বলেন, ‘‘বিজেপি প্রচার পাওয়ার জন্য এবং আমাদের বদনাম করার জন্য এ সব করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy