নর্দমার উপরেই চলছে দোকান। খড়্গপুরে। নিজস্ব চিত্র
বড় রাস্তার ধারেই নিকাশি নালা। অথচ বোঝার উপায় নেই। কোথাও সিমেন্টের ঢাকনা দিয়ে নালার উপরে গজিয়েছে দোকান, আবার কোথাও বাড়ি বা দোকানের প্রবেশপথ সুগম করতে নর্দমার উপরের অংশ স্থায়ীভাবে সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবরুদ্ধ ওই সব নিকাশি নালায় বছরভর জল জমে থাকছে। তাতেই বাড়ছে ডেঙ্গি-বিপদ।
জেলার মধ্যে এ বার খড়্গপুরেই ডেঙ্গির দাপট সব থেকে বেশি। আক্রান্তের সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে। পুরসভা বারবার দাবি করছে, শহর জুড়ে সাফাই অভিযান চলছে, মাইকে সচেতনতা প্রচার চলছে, ছড়ানো হচ্ছে লিফলেট। কিন্তু এই সব অবরুদ্ধ নিকাশি নালা হয়ে উঠেছে মশার আঁতুড়ঘর। ইচ্ছেমতো নর্দমা জবরদখল করে দোকান, বাড়ি গজিয়ে উঠছে। আর সেই নালার খোলা অংশ সাফাই করা হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে পুরসভা উদাসীন বলেই অভিযোগ। আর তাতে ক্ষোভ বাড়ছে শহরবাসীর।
রেল শহর জুড়েই জবরদখলের ছবি। ছোট দোকানি থেকে বড় ব্যবসায়ী— জবরদখলে কেউ পিছিয়ে নেই। কোথাও আবার গৃহস্থের বাড়ি তৈরির সময় জবরদখল চলছে। আর জবরদখলের সেরা ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে রাস্তার ধারের নর্দমা। বাড়ি বা দোকানের সীমানা বরাবর নর্দমা জবরদখল করে মাটি ফেলে সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নিকাশির পথ না পাওয়া ওই সব নর্দমায় জল জমে থাকছে সারাবছর। সামান্য বৃষ্টি হলে উপচে রাস্তায় উঠছে জল। আর সেই জমা জলে জন্মাচ্ছে মশার লার্ভা। শহরের কৌশল্যা, ইন্দা, ঝাপেটাপুর এলাকায় এই প্রবণতা সব থেকে বেশি। কৌশল্যা মোড়ের কাছে অধিকাংশ দোকানি নর্দমা দখল করে নিয়েছেন। তার উপরে গাড়ি-মোটরসাইকেল ধোওয়ার ব্যবসা থেকে ছাউনি দিয়ে পাকাপাকি দোকানও হয়ে গিয়েছে। জল বেরোনোর পথ নেই। আর অবরুদ্ধ নালা সাফাইয়েরও উদ্যোগ নেই। স্থানীয় বাসিন্দা ফাল্গুনিরঞ্জন রাজ বলেন, “আমাদের এই কৌশল্যা থেকে ঝাপেটাপুর মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারেই জবরদখল। অধিকাংশ দোকানি নর্দমার ওপরে সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে দিয়েছে। ফলে জল বেরোতে না পেরে কিছু অংশে জমে থাকছে। এতেই তো মশার উপদ্রব বাড়ছে।”
শুধু কৌশল্যা নয়, মালঞ্চ, ইন্দা এলাকাতেও একই অবস্থা। বছর খানেক আগে মালঞ্চ রোডের ধারে বেশ কয়েকটি এলাকায় নর্দমার ওপরে থাকা সিমেন্টের ঢাকনা সরিয়ে সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছিলেন কাউন্সিলরেরা। তবে বেশ কয়েকটি জায়গায় দোকানিদের বাধা এসেছিল। এখনও ইন্দায় রাস্তার ধারে একই অবস্থা থেকে গিয়েছে। রাস্তার দু’ধারে থাকা নর্দমা জবরদখল হয়ে গিয়েছে। বহু বছর ধরে ওই নর্দমা পরিষ্কার না হওয়ায় রুদ্ধ হয়েছে নিকাশির পথ। জমা জলে বাড়ছে মশা। ইন্দার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তন্ময় মহাপাত্র বলেন, “শীতেও ডেঙ্গি ছড়চ্ছে। তাই মশার উপদ্রবে আতঙ্কে রয়েছি। সব জেনেও পুরসভা উদাসীন” অবশ্য সমস্যার কথা মানছেন খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। তাঁর আশ্বাস, “এটা ঠিক আমাদের শহরে জবরদখলের কারনে নালাগুলি রুদ্ধ হয়ে রয়েছে। আগামী ৯ নভেম্বরের বৈঠকে কাউন্সিলরদের নিজের এলাকায় জবরদখল সরিয়ে হলেও নর্দমা পরিস্কার করতে বলা হবে। এর জন্য খরচ বাধা হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy