Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নদী ফিরবে ১০০ দিনের কাজে

এই প্রকল্পের নাম ‘ঊষরমুক্তি’। একেবারে গ্রাম সংসদস্তর থেকেই পরিকল্পনা শুরু হবে। হারানো গতিপথের খোঁজ পেতে গুগল ম্যাপের সাহায্য নেওয়া হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪২
Share: Save:

দিন বদলের সঙ্গে গতিপথ হারিয়েছে বহু নদীই। মজে গিয়ে হারিয়েছে স্রোত। নদীর ওই হারানো গতিপথ ফেরাতেই এ বার উদ্যোগী হল প্রশাসন। একশো দিনের প্রকল্পে এই কাজ হবে। ‘পাইলট প্রজেক্ট’-এর জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরের দু’টি ব্লক— শালবনি আর কেশিয়াড়িকে বাছা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের প্রাথমিক রূপরেখাও তৈরি করা হয়েছে।

এই প্রকল্পের নাম ‘ঊষরমুক্তি’। একেবারে গ্রাম সংসদস্তর থেকেই পরিকল্পনা শুরু হবে। হারানো গতিপথের খোঁজ পেতে গুগল ম্যাপের সাহায্য নেওয়া হবে। সেচ ব্যবস্থার উন্নতির জন্যই এই উদ্যোগ। প্রকল্পে বিভিন্ন খাল, চেকড্যাম সংস্কারও করা হবে। একশো দিনের কাজ প্রকল্পের জেলা আধিকারিক মনমোহন ভট্টাচার্য বলেন, “সেচ ব্যবস্থার উন্নতিই এই প্রকল্পের লক্ষ্য। অনেক নদীর গতিপথ হারিয়ে গিয়েছে। এই গতিপথ ফেরানো গেলে সেচ ব্যবস্থারও উন্নতি হবে।’’

পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রামগঞ্জের আশপাশেও অতীতে ছোট অনেক নদী ছিল। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, নদী বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘স্পিল চ্যানেল’। এই স্পিল চ্যানেল বা ছোট নদীগুলো হারিয়ে যাওয়ার কারণে বড় নদী তার বয়ে আনা অতিরিক্ত জল ছড়িয়ে দিতে পারে না। এ ছাড়াও নদীর পারে পাড় বাঁধ বা এমব্যাঙ্কমেন্ট থাকার কারণে বড় নদীর জল সরাসরি বেরিয়ে যেতে পারে না। যার ফলে বন্যার জল একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে। তাঁর কথায়, “বর্ষার জল জমির ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ঢালের দিকে। উঁচু-নিচু সেই জমির নিম্নতম অংশ দিয়ে জল গড়িয়ে যাওয়ার সেই পথগুলোই নদী। নদী একদিকে তার বয়ে আনা পলি ফেলে উর্বর মাটি তৈরি করে তুলেছে। অন্য দিকে ছোটবড় নদীগুলোই ছিল অববাহিকায় বৃষ্টির জলের স্বাভাবিক নিকাশিপথ। বর্ষায় স্ফীত হয়ে ওঠা নদী কূল ছাপিয়ে দু’পাশের অনেকখানি অঞ্চল জুড়ে বইত।” দিন বদলের সঙ্গে ধীরে ধীরে অনেক নদী মরেও গিয়েছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় দেড় হাজার মিলিমিটার। জেলার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে কংসাবতী, শিলাবতী, সুবর্ণরেখা। কিন্তু তাও জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচের জল পৌঁছয় না। সেচের হাল ফেরাতে জেলায় আগেই শুরু হয়েছে ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পের কাজ। জলবিভাজিকা প্রকল্প, ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চন যোজনা’তেও কাজ শুরু হয়েছে।

সেচ দফতর সূত্রে খবর, জেলার জলস্তর খুব বেশি নয়। ফলে, পর্যাপ্ত জলের অভাবে চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হারানো নদী গতিপথ ফেরত পেলে এই অবস্থা বদলাবে বলেই আশা। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলছিলেন, “অনেক নদীর গতিপথ মজে বা ভাঙনে হারিয়ে গিয়েছে। এখন জলপ্রবাহ সংক্রান্ত কোনও তথ্য মেলে না। সেই সব নদীকে বাঁচিয়ে রাখতেই এই প্রকল্প।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

River reformation 100 days work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE