নতুন শিক্ষাবর্ষে ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অনেক স্কুলেই ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকা কম।
কোনও স্কুলে চোদ্দো জনের জায়গায় সাকুল্যে চার জন। কোথাও দশ জনের জায়গায় মোটে এক জন। ফলে ওই সব স্কুলে বিজ্ঞানের ক্লাস নিয়ে সমস্যা হবে, বলাই বাহুল্য।
মুরুটিয়ার কেচুয়াডাঙা বিধানচন্দ্র বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক উদয় সিহি জানান, স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় বারোশো। পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি ক্লাসে দু’টি করে সেকশন। দশম শ্রেণিতে ১৩০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলেও শিক্ষকের অভাবে একটি সেকশনে তাদের পড়ানো হয়। স্কুলের মোট এগারোটি সেকশনে বিজ্ঞানের জন্য এক জন মাত্র অঙ্কের শিক্ষক রয়েছেন। তাঁর একার পক্ষে প্রতিটি শ্রেণির অঙ্ক, ভৌতবিজ্ঞান ও জীবনবিজ্ঞানের ক্লাস নেওয়া সম্ভব নয়। অগত্যা অন্য বিষয়ের শিক্ষকেরা বিজ্ঞানের ক্লাস নিচ্ছেন।
কেন এই পরিস্থিতি? স্কুল সূত্রে জানা যায়, দু’বছর আগে চার জন বিজ্ঞানের শিক্ষক চলে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন অবসর নিয়েছেন, বাকি দুজন বদলি হয়েছেন। তাঁদের জায়গায় নতুন করে শিক্ষক না আসাতেই সমস্যা। বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও সমাধান হয়নি।
করিমপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে চোদ্দো জনের জায়গায় চার জন, গোয়াস উচ্চ বিদ্যালয়ে দশ জনের বদলে চার জন, তারকগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে সাত জনের জায়গায় এক জন, হোগলবেড়িয়া আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে এগারো জনের জায়গায় পাঁচ জন বিজ্ঞান শিক্ষক রয়েছেন। হোগলবেড়িয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিমলকৃষ্ণ বিশ্বাস জানান, স্কুলে প্রায় তেইশশো ছাত্রছাত্রী। ষষ্ঠ শ্রেণিতে দু’টি এবং পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে চারটি করে সেকশন রয়েছে। জীবনবিজ্ঞানের জন্য তিন জন শিক্ষক বরাদ্দ হলেও এক জনও নেই। নিচু ক্লাসে কাজ চালানো গেলেও একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস বন্ধ করে দিতে হয়েছে। রসায়ন বিভাগেরও একই দশা। এগারো জনের বদলে মাত্র পাঁচ শিক্ষককে নিয়ে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২২টি সেকশন, তার উপর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস করানো যাচ্ছে না। কয়েক বছরে জীবনববিজ্ঞানের দু’জন ও রসায়নের এক শিক্ষক বদলি হয়ে গেলেও নতুন কেউ আসেননি।
করিমপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সভাপতি অনুদেব মজুমদার বলেন, “অবসর ছাড়াও সাধারন বদলির বিষয়টি চালু হওয়ার পর থেকে গ্রামগঞ্জের অনেক শিক্ষক শহরের বা বাড়ির কাছাকাছি কোনও স্কুলে বদলি নিয়ে চলে গিয়েছেন। ফলে গ্রামের স্কুলে পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা কমেছে।” জেলা স্কুল পরিদর্শক মিতালি দত্ত বলেন, ‘‘নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ হলেই ওই সব স্কুলে পাঠানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy