সরকারি নির্দেশ স্পষ্ট ছিল না। এতদিন এই যুক্তি দেখিয়ে কৃষি সমবায়গুলির অধীনে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছিলেন না। এই জটিলতা কাটাতে শেষ পর্যন্ত নতুন নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য দফতর। নতুন নিয়ম অনুযায়ী এ বার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন কৃষি সমবায় সমিতির অধীনে থাকা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাও।
২০১৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই প্রকল্পের সূচনা করেন। ওই প্রকল্পে জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশনের অধীনে তৈরি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাই কেবলমাত্র এতদিন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছিলেন। এ নিয়ে সমবায়ের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ক্ষোভ ছিল। সমবায় দফতরের কর্তারা সরকারি স্তরে একাধিক জায়গায় দরবার করে আসছিলেন। রাজ্য গ্রামীণ জাতীয় মিশনের অধিকর্তা ছোটেন লামা ১৩ অক্টোবর নির্দেশিকা জারি করেন। তাতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, এ বার থেকে সমবায়ের অধীনস্থ গোষ্ঠীর মহিলারাও এই সুবিধা পাবেন। তিনি নির্দেশিকার প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন রাজ্যের সব জেলার জেলাশাসকদের। অধিকর্তার চিঠি পেয়েই নদিয়া-মুর্শিদাবাদের সমবায়ের কর্তারা তা স্থানীয় সমবায় সমিতিগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে। জোরকদমে সমবায়ের মাধ্যমে তৈরি গোষ্ঠীর মহিলাদের বিমার আওতায় আনার কাজ শুরু হয়েচে দুই জেলায়।
নদিয়া জেলায় সমবায়ের অধীনে প্রায় ৩০ হাজার গোষ্ঠী রয়েছে। সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ। সমবায় দফতরের ‘সেন্ট্রাল জোন’-এর যুগ্ম নিবন্ধক মহম্মদ ইনাসউদ্দিনের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল জেলাশাসক সুমিত গুপ্তর সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠকেই জেলাশাসক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্দেশিকা মেনে তিনি দ্রুত কাজ শুরু করবেন।
জেলাশাসক জানান, ইতিমধ্যে গোষ্ঠীর সদস্যদের নাম এই প্রকল্পে নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান শিবনাথ চৌধুরী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ৬০ হাজার আবেদনপত্র প্রকল্পের পোর্টালে আপলোড করা হয়েছে। আশা করছেন নতুন বছরের একেবারে শুরুর দিক কার্ড মিলবে।
এই প্রকল্পের আওতায় থাকা মহিলার পরিবার বছরে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাসলেস বিমার সুবিধা পাবেন। এর জন্য তাঁকে কোনও টাকাই দিতে হবে না। বিমা সংস্থাকে প্রিমিয়ামের টাকা দেবে সরকারই।
ধুবুলিয়ার বাসিন্দা আনোয়ারা বিবি জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্যসাথীর অধীনে আসায় তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যের অসুখ-বিসুখ নিয়ে চিন্তা অনেকটাই কমল। মুর্শিদাবাদেও প্রকল্পের সুবিধা প্রাপকের নাম তালিকায় ঢোকানোর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই জেলারও প্রায় লক্ষাধিক মহিলা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে বিমার সুবিধা পাবেন। মুর্শিদাবাদ সমবায় দফতরের সহকারি নিবন্ধক বিনয় বিশ্বাস জানান জেলায় সমবায় দফতরের অধীনে ১৫ হাজার গোষ্ঠী রয়েছে। সবকিটি গোষ্ঠীকেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কথা জানানো হয়েছে। তার মধ্যে ১০ হাজার মহিলার আবেদন স্বাস্থ্যসাথী পোর্টালে আপলোড করা হয়েছে। তার মধ্যে ৪৯৪৩ গৃহীত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy