দিনকয়েক আগেই বলা হয়েছিল, মিড ডে মিলে আধার কার্ড আবশ্যক। অবশ্য রাজ্যগুলির চাপে সে সিদ্ধান্ত থেকে আপাতত সরে এসেছে কেন্দ্র। তবে সরকারি নানা প্রকল্পে আর্থিক সুবিধা পেতে পড়ুয়াদের অদূর ভবিষ্যতে আধার কার্ড দেখাতে হতে পারে। এই ভাবনা থেকে নদিয়া জেলা প্রশাসন এপ্রিল থেকে পড়ুয়াদের আধার কার্ড তৈরির ব্যাপারে বিশেষ পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে। প্রয়োজনে স্কুলে-স্কুলে শিবির করে বিলি করা হবে আধার।
নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শঙ্কর নস্কর বলছেন, “এখন সব সরকারি প্রকল্পেই আধার কার্ড চাওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে কন্যাশ্রী-সহ অন্য বৃত্তি পেতে ব্যাঙ্কগুলি আধার কার্ড চাইতেই পারে। তাই এই বিশেষ অভিযানের ভাবনা।’’
নদিয়ার লিড ব্যাংক ম্যানেজার সুগত লাহিড়ী বলছেন, “আধার না থাকলে পরবর্তীতে সরকারি অনুদান পেতে অসুবিধা হবে। তাই এখন থেকেই তা চাওয়া হচ্ছে।”
গত কয়েক মাস ধরে জেলায় স্কুলগুলি আধার কার্ড তৈরির জন্য পড়ুয়াদের তাগাদা দিচ্ছে। ভীমপুরের আসাননগর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিশিরকুমার বিশ্বাস বলছেন, “এখন যাবতীয় আর্থিক সাহায্য সরাসরি অ্যাকাউন্টে দেওয়া হচ্ছে। আর অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলেই আধার কার্ড তলব করছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ফলে আমরা পড়ুয়াদের দ্রুত আধার কার্ড করতে বলছি। বিষয়টি ব্লক প্রশাসনেরও গোচরে আনা হয়েছে।’’
কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা সরাসরি জমা পড়ে ছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে। তাছাড়া আর্থিক ভাবে অনগ্রসর তপশিলি জাতি-উপজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারাও বাৎসরিক ছাত্র-বৃত্তি। সে টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে জমা করে প্রশাসন। ধবুলিয়া সুভাষচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী জানাচ্ছে, পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপের জন্য সে কিছুদিন আগে স্থানীয় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যায়। ব্যাঙ্কের লোকজন জানায়, অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে আধার কার্ড ফটোকপি জমা দিতে হবে। নিরুপায় হয়ে বাড়ি ফিরে আসে সে।
করিমপুরের নাটনার সহদেব প্রামাণিকের ছেলে বিষ্ণু প্রামাণিক সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে। বিষ্ণুর আধার কার্ড নেই। সহদেববাবু বলেন, “ছেলের এখনও আধার কার্ড হয়নি। ফলে খুব সমস্যা হচ্ছে। স্কুল ওই কার্ড চেয়ে তাগাদা দিচ্ছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ১১ লক্ষ ৮৫ হাজার স্কুল পড়ুয়া রয়েছে। তার মধ্যে ৮ লক্ষ ৩৪ হাজার ছেলেমেয়ের আঁধার-তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। অর্থাৎ ৭০ শতাংশ পড়ুয়ার আধার রয়েছে।
প্রশাসনের মাথাব্যথা বাকি ৩০ শতাংশ পড়ুয়াকে নিয়ে। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তা জানাচ্ছেন, আশা করি গ্রাম পঞ্চায়েত ও স্কুলে স্কুলে শিবির করে কয়েক মাসের মধ্যে সকলেই আধার কার্ড দেওয়া যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy