ছবি: প্রতীকী
মেয়ের বয়স মেরেকেটে তেরো। সেই বয়সে ‘স্বামীর ঘর’-এ পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন বাবা-মা। আয়োজনও সারা। গায়ে হলুদও পড়ে গিয়েছে।
কিন্তু প্রশাসনের তৎপরকতায় বন্ধ হল সেই মেয়ের বিয়ে। যদিও তা করতে গিয়ে বিস্তর ঝামেলার পোহাতে হয় কর্তাদের।
শুক্রবার ভরতপুরের ঝিকরা গ্রামে বিয়ে হচ্ছিল ওই নাবালিকার। খবর পেয়ে বাড়িতে যান বিডিও অঞ্জন চৌধুরী। বাড়ির সামনে জিপ থামতে দেখে সন্দেহ হয়েছিল আত্মীয়দের। পরে বিডিও-র মুখে বিয়ে বন্ধের নির্দেশ শুনে রে রে করে তেড়ে আসেন তাঁরা। পরিস্থিতি দেখে পুলিশ তাঁদের আটকান। এক আত্মীয়কে বলতে শোনা যায়, “বিয়েটা আপনার টাকায় হচ্ছে নাকি যে বিয়ে বন্ধ করতে হবে?”
বিডিও ওই নাবালাকার বাবা-মাকে ব্লক অফিসে আসতে অনুরোধ করেন। সেখানে গিয়ে বিডিও ও সরকারি কর্মীরা তাঁদের বোঝান, আঠারো বছর না হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। এটা
অপরাধও বটে।
তার পরেও নাবালিকার মায়ের আর্জি, ‘‘গরিব মানুষ। বিনা পয়সায় মেয়ের বিয়ে হয়ে যাবে। এমনটা করবেন না।’’ কিন্তু মেয়ের বয়সের প্রমাণপত্র দেখে জানা যায়, মেয়ের বয়স মাত্র তেরো। তখনই দিনমজুর বাবাকে বুঝিয়ে মেয়েকে পড়াশোনা করানোর ব্যবস্থার আশ্বাস দেয় ব্লক প্রশাসন। তারপরে মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলে সম্মত হন তাঁরা। সেই মর্মে মুচলেকাও দেন। নাবালিকারা বাবা মা পরে বলেন, ‘‘আইনের কী বুঝি বলুন তো! তবে যা হয়েছে তাতে মেয়ের ভাল নিশ্চয়ই হবে।”
বিডিও অঞ্জন চৌধুরী জানান, গত দু’মাসে ব্লকে ১২ জন নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে তাঁরা সক্ষম হয়েছেন। এত প্রচারের পরেও এখনও অনেকে নাবালিকার মেয়ের দিচ্ছেন। তাই যারা বিয়ে দেন যেমন, পুরোহিত ও ইমামদের নিয়ে বৈঠক করে নাবালিকার বিয়ে বন্ধের বিষয়ে সচেতনা শিবির করবেন।
কান্দির মহকুমাশাসক অভীক কুমার দাস বলেন, “যে সমস্ত মন্দিরে বিয়ে হয় সেই সমস্ত মন্দিরের পুরোহিতদের নিয়ে একটি বৈঠক করছি। প্রত্যেক ব্লকে পুরোহিত ও ইমামদের নিয়েও ওই বৈঠক হবে। পুলিশকে এলাকার মন্দিরগুলির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy