বিক্ষোভ: রাস্তায় খুচরো ছড়িয়ে প্রতিবাদ। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম
বছরখানেক আগেও ঝোলা ভারী হলে খুশিতে ডগোমগো হয়ে বাড়ি ফিরতেন বছর পঞ্চাশের আজাদ। এখন তাঁর মুখ ভার।
রানিনগরের কৃষ্ণনগর গ্রামের অন্ধ ভিখিরি আবুল কালাম আজাদই শুধু নয়, চাল-ডাল কিনতে গিয়ে হোঁচট খেতে হচ্ছে সব ভিক্ষাজীবীকেই। সারা দিন ভিক্ষা করে হোটেলে খেতে গেলে বলা হচ্ছে— ‘ঝোলায় খুচরো থাকলে কেটে পড়ো। নোট হলে খাবার হবে, না হলে নয়।’
বুধবার বিকেলে ইসলামপুর বাজারে বহরমপুর-করিমপুর সড়কে খুচরো পয়সা ছড়িয়ে এর প্রতিবাদ করলেন ইসলামপুর, ডোমকল ও রানিনগরের ভিখিরিরা। ঘরে পাঁচ-দশ হাজার টাকার রেজগি পড়ে রয়েছে, অথচ পেট চলছে না। এর প্রতিকার না হলে রেজগি ফেলে পথ অবরোধ বা ব্যাঙ্কে গিয়ে ধর্না দেবেন বলেও তাঁরা হুমকি দিয়েছেন।
ডোমকলের হিতানপুরের হানুফা বেওয়ার আক্ষেপ, ‘‘দিন কয়েক হল, বোনের বাড়িতে খাচ্ছি। হাটে পয়সা নিয়ে গেলেও ফিরিয়ে দিচ্ছে সকলে।’’ এই ভিখিরিদের একটা বড় অংশই প্রতিবন্ধী। ইসলামপুর বাজারে ভিক্ষা করেন গোলাম মোর্তজা। তার কথায়, ‘‘এমন অবস্থা হয়েছে, যে অনেক ভিখিরি এখন বাজারে না এসে গ্রামে গিয়ে চাল ভিক্ষা করছেন। হাটে গিয়ে পটল-বেগুনও চেয়ে নিচ্ছেন অনেকে। কিন্তু নুন-তেল কিনতে গেলেই বিপদ, দোকানিরা খুচরো নিচ্ছে না।’’
ইসলামপুর নওদাপাড়ার মওলা বক্স দুপুরে হোটেলে খান আর রাতে মুড়ি। এখন হোটেল আর তাঁকে ভাত দিতে চাইছে না। হোটেল মালিক এবং দোকানিরা পাল্টা বলছেন, তাঁদের হাতে যত রেজগি জমছে তাতে ক’দিন পরে তাঁদেরও ঝোলা নিয়ে পথে দাঁড়াতে হবে। মহাজনেরা রেজগি নিয়ে মাল দিতে নারাজ। ডোমকলের এক পেট্রোল পাম্পের মালিক শাহিন আনসারি বলেন, ‘‘এমন কোনও দিন নেই খুচরো নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে না। আবার ব্যাঙ্কে গেলে তারাও ফিরিয়ে রেজগি নিচ্ছে না।’’ জেলার লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অমিত সিংহ বলেন, ‘‘এটা সত্যিই বড় সমস্যা। ওই এলাকার ব্যাঙ্কগুলোর সঙ্গে কথা বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy