Advertisement
১১ মে ২০২৪

মাঠ ঢেকেছে বেগুনি ফুলে, শিকেয় সর্ষে চাষ

মেরেকেটে ইঞ্চি ছয়েক লম্বা, ঘাসের মতো, পাতা নেই তবে, ফুলে ঢাকা। বেগুনি রঙের সেই বাহারি ফুলেই মুখ ঢেকেছে নদিয়া আর লাগোয়া মুর্শিদাবাদের সীমান্তের মাঠঘাট। মাস খানেক ধরে তাই সীমান্তের চাষিদের কপালে ভাঁজ।

এই বেগুনি রঙের আগাছা নষ্ট করছে সর্ষে চাষ। — নিজস্ব চিত্র

এই বেগুনি রঙের আগাছা নষ্ট করছে সর্ষে চাষ। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমপুর ও জলঙ্গি শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৭
Share: Save:

মেরেকেটে ইঞ্চি ছয়েক লম্বা, ঘাসের মতো, পাতা নেই তবে, ফুলে ঢাকা। বেগুনি রঙের সেই বাহারি ফুলেই মুখ ঢেকেছে নদিয়া আর লাগোয়া মুর্শিদাবাদের সীমান্তের মাঠঘাট। মাস খানেক ধরে তাই সীমান্তের চাষিদের কপালে ভাঁজ।

উদ্ভিদবিদ বিশেষজ্ঞদের কাছে এর কোনও চেনা নাম নেই, তবে তার দাপট সদ্য টের পেয়েছেন তাঁরা। যার দ্রুত বাড় বৃদ্ধিতে ছেয়ে গিয়েছে সর্ষে খেত। মাঠের কুমড়ো কিংবা কলাই চাষও একই ভাবে ওই নাম না জানা আগাছায় দাপটে ম্রিয়মান।

নদিয়ার মুরুটিয়া এলাকার সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম গান্ধিনা, ফুলবাড়ি। এলাকার প্রায় পাঁচশো বিঘা জমিতে এ বছর শীতের সর্ষে চাষ করেছিলেন চাষিরা। কিন্তু আগাছার দাপটে তাঁরা সর্ষে তুলতে পেরেছেন সামান্য।

নন্দলালপুরের চাষি নূর মহম্মদ বলেন, “সমস্যাটা বছর কয়েক ধরেই দেখছি। তবে, এ বার একেবারে ছেয়ে ফেলেছে জমি।’’ চাষিরা বলছেন, মূলত সর্ষে জমিতেই এই সমস্যা হচ্ছিল এত দিন। জলঙ্গির চাষি মকবুল আলমের অভিজ্ঞতা, ‘‘এ বার তো দেখছি, কুমড়ো কিংবা অন্য রবি ফলনেও থাবা বসিয়েছে আগাছা।’’

তবে, চাষিরা জানাচ্ছেন, গম বা অন্য চাষে এই আগাছার কিন্তু দেখা মিলছে না। সর্ষের ক্ষেত্রেও ফুল থাকা অবধি কোন সমস্যা নেই। কিন্তু সর্ষের ফুল থেকে ফল হতেই আগাছায় জমি ভরে যাচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যে জমির সব সর্ষে গাছ শুকিয়ে কাঠ। কোনও ওষুধে সেই আগাছা মারাও সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে এ বার ওই এলাকাগুলির কোনও চাষির মাঠে সর্ষে ওঠেনি। এক চাষির কথায়, ‘‘এ বছর বিঘা দুয়েক জমিতে সর্ষে চাষ করেছি। প্রায় আট হাজার টাকা খরচ করেছি। স্বাভাবিক ফলন হলেও প্রায় আট কুইন্টাল ফলন হওয়ার কথা। কিন্তু এ বার তা এক্কেবারে জলে গেল।” গান্ধিনার প্রান্তিক চাষি নফরুদ্দিন শেখের অভিযোগ, “গত বারও ভুগেছিলাম। এ বার তো মাঠে পা দেওয়া যাচ্ছে না।’’

দু’জেলার চাষিদের অভিযোগ, এ ব্যাপারে বার বার ব্লক কৃষি আধিকারিকের কাছে দরবার করেও সাড়া মেলেনি। সমাধান করা তো দুরের কথা চাষিদের সমস্যার কথা শুনতেও চাইছে না কৃষি দফতর বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

তাহলে উপায়? করিমপুর ব্লক কৃষি আধিকারিক শ্যামপ্রসাদ মজুমদার বলেন, “আগাছার কথা শুনলাম। ওই আগাছা সর্ষে বীজ থেকে এসেছে নাকি অন্য কোনও কারনে তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন চাষিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mustard Plant Cultivation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE