নিস্তারিণীর মন্দির। রানাঘাটে।
সাদামাটা একটা মন্দির। তৈরি হয়েছিল দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দির তৈরি হওয়ার বছর কুড়ি আগে। কথিত আছে, রানাঘাটের সেই নিস্তারিণী মন্দিরের আদলেই তৈরি হয়েছিল দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দির।
নিস্তারিণী মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে চূর্নী নদী। এক সময় এই নদীই ছিল কলকাতা এবং কৃষ্ণনগরের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। রানি রাসমনি যখন ভবতারিণী মন্দির প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন, মন্দির কেমন হবে তা নিয়ে বিস্তর চিন্তাভাবনা শুরু হয়।
বিষয়টি নিয়ে তিনি তার নিকট আত্মীয়দের সঙ্গেও আলোচনা করছিলেন। তৈরি হচ্ছিল নানান নকশা। সেই সময় একদিন এই নদী পথে রানী রাসমনির জামাই মথুর কৃষ্ণনগরে যাচ্ছিলেন। তখন তাঁর নজরে পড়ে এই মন্দির। লোকমুখে শোনা যায়, মথুরবাবু নৌকা থামিয়ে এই মন্দিরের কাছে আসেন। খুব মনোযোগ দিয়ে মন্দির দেখেন।
তিনি ফিরে গিয়ে রাসমনিকে মন্দিরের কথা জানান। শোনা যায়, পরে কলকাতা থেকে মিস্ত্রি নিয়ে আসা হয়েছিল এই মন্দির দেখার জন্য। মিস্ত্রিরা ফিরে গিয়ে এই মন্দিরের আদলেই দক্ষিনেশ্বরের মন্দির তৈরির কাজ শুরু করেন।
নিস্তারিণী মন্দিরটি রানাঘাট শহরের বড়বাজার এলাকায়। এক সময় এই এলাকায় বসবাস করতেন জমিদার রতন চন্দ্র পালচৌধুরী। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। রতনবাবু মারা যাওয়ার পর এই মন্দির নির্মান করেছিলেন তার স্ত্রী উজ্জ্বলমুনি দাসী। সেই সময় এই মন্দির তৈরি করতে খরচ হয়েছিল ৭৫ হাজার টাকা। মন্দির নির্মান করতে সময় লেগেছিল ৯ বছর। ১২৪২ বঙ্গাব্দে জ্যৈষ্ঠ মাসের সংক্রান্তির দিন এই মন্দিরের দ্বারোগ্ধাটন হয়েছিল। এখনও প্রতি বছর এই দিনটিতে মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হয়।
উজ্জ্বলমুনি দাসী মন্দিরের দায়িত্ব তাঁর ভাসুর এবং দেওয়রের ছেলেদের উপর দিয়েছিলেন। সেই থেকে তাদের পরিবারের ছেলেরা এই পূজো করে আসছে। এখন এই মন্দির দেখভাল করেন পরিবারের সদস্য অলোকেন্দু পাল চৌধুরী, অমিতেন্দু পাল চৌধুরী এবং অর্ধেন্দু পাল চৌধুরী।
অর্ধেন্দুবাবু বলেন, “১৭৫ বছর পুর্তি উপলক্ষে মন্দির সংস্কার করা হয়েছিল। প্রায় পাঁচ বছর সময় লেগেছে এই মন্দির সংস্কার করতে। সেই সময় মায়ের মুর্তিতে রং করা হয়।’’ তিনি জানান, শিল্পীর কাছে শোনা গিয়েছিল যে, একটি পাথর কেটেই নাকি কালী এবং শিবের মুর্তি তৈরি করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy