Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কর্মীর অভাব, কল্যাণীতে ধুঁকছে ডাক

ন্যাশনাল সেভিংস স্কিম কেনার জন্য ডাকঘরে ছুটে ছুটে জুতোর সুখতলা খুইয়ে ফেলছেন কল্যাণীর ‘বি’ ব্লকের বাসিন্দা পরিমল সরকার। গত একমাস ধরে এলাকার মুখ্য ডাকঘর কল্যাণীতে যাচ্ছেন তিনি। প্রতিবারই ফিরে আসেন। কোনও বার শোনেন, কর্মী নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৬ ০২:৩৬
Share: Save:

ন্যাশনাল সেভিংস স্কিম কেনার জন্য ডাকঘরে ছুটে ছুটে জুতোর সুখতলা খুইয়ে ফেলছেন কল্যাণীর ‘বি’ ব্লকের বাসিন্দা পরিমল সরকার। গত একমাস ধরে এলাকার মুখ্য ডাকঘর কল্যাণীতে যাচ্ছেন তিনি। প্রতিবারই ফিরে আসেন। কোনও বার শোনেন, কর্মী নেই। কোনও বার শোনানো হয়, সফটওয়্যার আপলোডের কাড চলছে। পরিমলবাবুর প্রশ্ন, আদৌ ওই স্কিম কিনতে পারবেন তো।

একই রকম ভাবে নাজেহাল হচ্ছেন আরও এক গ্রাহক সুজিত বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের অজুহাত দেখিয়ে কর্মীরা ঘুরিয়ে যাচ্ছেন।’’

গ্রাহকদের অভিযোগ, গত একমাস ধরে কল্যাণীর ডাকঘরে কোনও সঞ্চয় প্রকল্পের কাজ হচ্ছে না। বন্ধ কিসান বিকাশ পত্রের মতো পরিষেবা। পোস্টকার্ড, ডাকটিকিট বিক্রির মতো মামুলি কাজ ছাড়া আর কোনও কাজ হচ্ছে না। গুরুত্বপূর্ণ কাজ কার্যত লাটে উঠেছে। হয়রান হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাস থেকে ডাকঘরের সঞ্চয় প্রকল্পগুলির সুদের হার ঢেলে সাজানো হয়েছে। এপ্রিলের প্রথম দিন থেকেই তাই বন্ধ সঞ্চয় প্রকল্পগুলির কাজ। কিন্তু কেন? ডাকঘরের কর্মীরা জানান, সুদের হার ঢেলে সাজানোর পর তাঁদের কম্পিউটারে নতুন করে সফটওয়্যার লোড করতে হয়। কিন্তু তা নাকি লোড করা যায়নি। দিন পনেরো এ ভাবেই পেরিয়ে যায়। তার পর যদিও বা সফটওয়্যার লোড হয়, কর্মীর ‘অভাবে’ থমকে আছে পরিষেবা। গ্রাহকদের অভিযোগ, ডাক কর্মীদের অপেশাদারি মনোভাবের জন্যই আজ ডাকঘরগুলির এমন দশা। ডাক বিভাগ যেখানে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে, সেখানে এমন কর্মপদ্ধতি তাতে বাধা তৈরি করবে। নদিয়া জেলায় ডাক বিভাগ দু’ভাগে বিভক্ত। কৃষ্ণনগর ও তেহট্ট মহকুমা নিয়ে নদিয়া উত্তর ডিভিশন। মূল কার্যালয় কৃষ্ণনগরে। রানাঘাট এবং কল্যাণী মহকুমা নিয়ে নদিয়া দক্ষিণ ডিভিশন। প্রধান কার্যালয় কল্যাণীতে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে মুখ্য ডাকঘরটিতে চরম অব্যবস্থা চলছে। আগে অধিকাংশ দিন কর্মীরা ডাকঘরের গেট বন্ধ করে রেখে দিতেন। ফলে পরিষেবা না পেয়ে ফিরতে হত গ্রাহকদের। কর্মীদের দাবি, ডাকঘরে কর্মচারী কম। ফলে অফিস খোলা থাকলে সব দায় তাঁদের উপরে এসে পড়ে। মুখ্য ডাকঘরের কম্পিউটারে নতুন সফটওয়্যার লোড করা হলেও, শাখা ডাকঘরগুলিতে তা হয়নি। ফলে সেখানেও পরিষেবা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। বর্তমানে ভোট মিটলেও কর্মীর অভাবে সঞ্চয় প্রকল্পগুলি এখনও চালু করা যায়নি। ডাক বিভাগের নদিয়া দক্ষিণ ডিভিশনের সুপারিন্টেনডেন্ট সত্যগোবিন্দ গিরি অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে সংবাদমাধ্যকে কিছু বলব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Post-office Bottleneck
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE