বিজয়ী: লটারির জেতার খবর শুনেও ছাড়েননি কাজ। নিজস্ব চিত্র
রাতারাতি তিনি ‘ভিআইপি’!
জঙ্গিপুর জুড়ে এখন চর্চা চলছে তাঁকে নিয়েই। চায়ের দোকান, পাড়ার মাচা, পুকুরঘাট, বিকেলের আড্ডায় একটাই বিষয়—এক্কেবারে একান্ন!
লটারিতে ৫১ লক্ষ টাকা পুরস্কার জিতেছেন মির্জাপুরের আমলাকুড়ির বাসিন্দা কৃষ্ণ মণ্ডল। সারা শহর তাঁকে অবশ্য কেষ্ট বলেই চেনে। বছর পঁয়তাল্লিশের ওই যুবক বাড়ি বাড়ি গ্যাসের সিলিন্ডার পৌঁছে দেন।
শনিবার জঙ্গিপুর গাড়িঘাটে রহমত শেখের লটারির দোকানে তিনি একটি টিকিট কাটেন। মঙ্গলবার জানা যায়, প্রথম পুরস্কার ৫১ লক্ষ টাকা জিতে নিয়েছেন কৃষ্ণ। হাওয়ার মতো সে খবর ছড়িয়ে যায় শহরে।
এই সে দিন পর্যন্ত যাঁরা বলেছেন, ‘কী রে কেষ্টা, সিলিন্ডার দিতে এত দেরি হচ্ছে কেন?’ কিংবা ‘তোর তো দেখছি, কাজে মন নেই।’ সেই তাঁদেরই অনেকে এ দিন বলেছেন, ‘‘কেষ্টা খুব পরিশ্রম করে। জানতাম, একদিন ওর ভাগ্য খুলে যাবে।’’
আরও পড়ুন: দাড়ি কেটে বেরিয়েই যেন ভুলে গেলাম সব
মুদি, চাওয়ালা, মাছ বিক্রেতাদের কেউ কেউ বলে রেখেছেন, ‘‘কেষ্টদা, আমাদের আবার ভুলে যাবেন না তো!’’ কৃষ্ণ কাউকেই নিরাশ করেননি। শুধু বলেছেন, ‘‘ভাই, পুরস্কার ৫১ লক্ষ। কিন্তু সব কেটেকুটে হাতে পাব ৩৭।’’
বুধবারেও তিনি বাড়ি বাড়ি গ্যাস পৌঁছে দিয়েছেন। যা দেখে শহরের অনেকেই বলেছেন, ‘‘আজকের দিনটা অন্তত একটু বিশ্রাম নিতে পারতে!’’ ‘‘তাহলে তো অসুস্থ হয়ে পড়ব। আর এই কাজটা কোনও দিনই ছাড়ব না।’’ হাসতে হাসতে প্যাডেলে চাপ দেন কৃষ্ণ।
স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে কৃষ্ণবাবুর সংসার। লটারির নেশা তাঁর বহু দিনের। কোনও দিন কোনও পুরস্কারও জোটেনি। এ বারই প্রথম। কৃষ্ণ বলছেন, ‘‘ও টাকা ব্যাঙ্কেই থাকবে। ভবিষ্যতে ছেলেদের কাজে লাগবে।” আর স্ত্রী পারুলদেবী বলছেন, ‘‘টিকিট কাটা নিয়ে বকাঝকাও করেছি খুব। এখন দেখছি, বহু কষ্টে তিনি ধরা দিয়েছেন।’’
তিনি কে?
লাজুক হেসে পারুলদেবী বলছেন, ‘‘স্বামী আর ওঁর যে একই নাম!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy