টলমল পুরসভা আর ছন্নছাড়া শহর— গত দু’বছর ধরে, কান্দির এটাই চেনা চেহারা।
কংগ্রেসের দখলে থাকা কান্দি পুরসভায় ক্রমাগত গোষ্ঠী কোন্দল, দলবদল আর সেই সুতোয় জড়িয়ে গিয়েছে আদ্যন্ত পুরকর্ম। রাস্তার মোড়ে জঞ্জালের পাহাড়, রাস্তায় জ্বলে না আলো, বন্ধ পার্কে আগাছার ভিড়, নিকাশি নালা উপচে থইথই করছে জল— অথচ কে তার সুরাহা করবে জানে না কান্দি। এই অবস্থায় পুরকর্মীদের বেতনেও টান পড়ছে থেকে থেকেই। তাই কখনও সাফাই কর্মী কখনও বা করণিকদের কর্মবিরতির চাপে নাভিশ্বাস উঠেছে মুর্শিদাবাদের পুরনো এই শহরের।
শুক্রবার থেকে সেই তালিকায় ফের যোগ হল— পুরসভার অস্থায়ীকর্মীদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি। এ দাবি অবশ্য নতুন নয়। গত দু’বছরে অন্তত সাত বার তাঁরা এই দাবিতে কর্মবিরতি করেছেন। দু’বছর আগের পুরনো শ্রী হারানো শহরটা এই লাগাতার বিরতির ছায়ায় এখন কার্যত স্তব্ধ।
১৮ ওয়ার্ডের পুরসভায় প্রায় লাখখানেক মানুষের বসত। পুর পরিষেবা ভুলে তাঁরা এখন নতুন কোনও কর্মবিরতির খবরে হতাশও বুঝি হন না।
পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত এক বছরে একই দাবিতে পুরসভায় সাতবার ধর্মঘট করেছেন পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা। যদিও তৃণমূল পরিচালিত ওই পুরসভার কর্মচারি সংগঠনের সম্পাদক সুভাষ মন্ডলের তা নিয়ে বিশেষ হেলদোল নেই, “আমরা শুধু যে ধর্মঘট করি এমন অভিযোগ করবেন না, বিষয়টার একটা সমাধানও তো হওয়া উচিত, সেটাও ভেবে দেখুন।’’ তাঁদের দাবি, পুরকর্তৃপক্ষ গুরুত্ব না দেওয়ায় ধর্মঘট ছাড়া তাঁদের আর দ্বিতীয় কোনও পথ খোলা নেই।
শহরের পরিবেশটা বিষিয়ে উঠছে না? সুভাষবাবু বলেন, “শহরের দূষণ ছড়াচ্ছে, দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানছি কিন্তু এ ছাড়া উপায় কী বলুন!’’
স্থানীয় বাসিন্দা অমিত দাস যা শুনে বলছেন, “পুরপরিষেবা হারিয়েছে অনেক দিন। এখন রাজনীতিই হচ্ছে। মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে বাবনা চিন্তা কি কাউন্সিলরদের আছে?’’ ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান সান্ত্বনা রায় বলেন, “বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কর্মীরা ধর্মঘট করছে। আমি পুরসভার সমস্ত কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু বৈঠকে কেউ না এলে কী করব বলুন। আমি অসহায়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy