Advertisement
১১ মে ২০২৪

মিড-ডে মিলের আঁচে স্কুল বুঝি জতুগৃহ

মাস দেড়েক আগে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের নাঘাটা প্রাথমিক স্কুলের সেই আগুনটা এখনও মনে আছে আশপাশের মানুষের। আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থাই না থাকায় হু-হু করে পুড়ে গিয়েছিল স্কুলটা। আধপোড়া সেই স্কুলটা দেখলে এখনও চোখ টাটায় গ্রামীণ ছেলেমেয়েগুলোর।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০১:৫৮
Share: Save:

ভাতের পরে সবে চড়েছে আলু-ঝিঙের ঝোল, ধোঁয়াটা খেয়াল পড়েছিল ঠিক তখনই।

রান্নার সময় গ্যাস লিক করে মিড-ডে মিলের হেঁশেলে সে এক হই-রই ব্যাপার। আতঙ্কে পড়ুয়ারা স্কুল ছেড়ে ছুটছে, অসহায় চোখে শিক্ষকেরা দেখছেন, স্কুল জুড়ে আগুনটা ছড়িয়ে পড়ছে ক্রমেই।

মাস দেড়েক আগে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের নাঘাটা প্রাথমিক স্কুলের সেই আগুনটা এখনও মনে আছে আশপাশের মানুষের। আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থাই না থাকায় হু-হু করে পুড়ে গিয়েছিল স্কুলটা। আধপোড়া সেই স্কুলটা দেখলে এখনও চোখ টাটায় গ্রামীণ ছেলেমেয়েগুলোর।

প্রান্তিক মুর্শিদাবাদেও ছবিটা অন্যরকম কিছু নয়। মিডডে মিলের আটপৌরে রান্নার মাঝেই আগুন ধরেছে কখনও খড়ের চালায় কখনও বা একচালা রান্নাঘরের দেওয়াল জুড়ে। এবং সব ক্ষেত্রেই অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় বেবাক পুড়েছে স্কুল। আর জমকলের অপেক্ষায় ফ্যাল প্য়াল করে তা দেখতে হয়েছে পড়ুয়াদের।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার অধিকাংশ প্রাথমিক স্কুলে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নেই। তুলনায় একটু এগিয়ে পড়শি মুর্শিদাবাদের প্রাথমিক স্কুলগুলি। জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাস থেকে মুর্শিদাবাদের স্কুলগুলিতে ফায়ার এগজিটিংগুইসার লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে।

নদিয়া জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত অবশ্য স্পষ্টই বলছেন, ‘‘জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের জন্য আলাদা কোনও তহবিল নেই। সর্বশিক্ষা মিশনের অর্থে ৫০টি অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র কেনা হয়েছে।’’ তবে, তা যে জেলার আনাচকানাচে ছড়িয়ে থাকা সব প্রাথমিক স্কুলে স্বস্তি দেবে না তা বলাই বাহুল্য। তবে তাঁদের যে এ ব্যাপারে পরিকল্পনা রয়েছে তা জানিয়েছেন নদিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায়।সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে নদিয়া জেলায় ২৬৩০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৬৪৫ টি হাইস্কুল ও উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। নিজস্ব উদ্যোগে এবং প্রশাসনের দেওয়া মিলিয়ে জেলার প্রায় ৩০০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা আছে।

সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলায় ৩১৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৯৩৩টি হাইস্কুল, উচ্চ প্রাথমিক এবং মাদ্রাসা রয়েছে। প্রাথমিক হাইস্কুল, উচ্চপ্রাথমিক এবং মাদ্রাসা মিলিয়ে ৪১১৭টি স্কুলের মধ্যে ৩৫৬২টি স্কুলে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দেওয়ার কাজ শুরু করেছে সর্বশিক্ষা মিশন। গত জানুয়ারি মাস থেকে সেই কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার ১৫৩৭টি স্কুলে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী কোথাও একটি, কোথাও বা দু’টি অগ্নিনির্বাপক
যন্ত্র রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mid Day Meal Education School Fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE