শিশুদের অপেক্ষায়। কান্দিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।
মর্চে ধরা ঢাউস একটা তালা, দু’বর্ষার আগাছায় ঢেকে রয়েছে গেট, পার্ক বন্ধ।
বিমলচন্দ্র শিশু উদ্যান— কান্দি হাসপাতালের সামনে খানকতক ঢেঁকি, দোলনা, গড়ানে স্লিপ নিয়ে চুপ করে পড়ে রয়েছে বছক দুয়েক ধরে।
ছবিটা বিলকুল অন্যরকম ছিল বছর দুয়েক আগে, দুপুর গড়ালেই যেখানে পাখির মতো কিচিরমিচির করত আশপাশের পাড়া-পল্লির কচিকাঁচারা, ভোর ফুটতেই গুটি গুটি মাফলার জড়ানো বয়স্ক-ভিড়, সেই বিমল বাগান এখন আগাছার নিবিঢ় জঙ্গল। কারণটা কী?
পুরসভা মুখ লুকোচ্ছে, স্থানীয় পুর প্রতিনিধি অপূর্ব সরকার বলছেন, ‘‘দেখি, কী করা যায়।’’ এই গয়ংগচ্ছ মনোভাবে শিশুদের পার্ক এখন ঝোপ-জঙ্গলের
জমাট আঁধার।
বছর দুয়েক ধরে, দল বদলের হিড়িক আর ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে কান্দির হদ্দ চেহারা ধরা পড়েছে কখনও উপচে পরা নালায়, গলির মোড়ে জমা আবর্জনার স্তূপে, আলোগীন রাস্তায় কিংবা
বন্ধ বাগানে।
বিমলচন্দ্র শিশু উদ্যান সেই তালিকায় শেষ সংযোজন। কান্দির অন্য পরিচয় রাজার শহর। রাজ-রাজাদের অজস্র স্মৃতি, পেল্লাই প্রাসাদের সঙ্গে ছড়িয়ে ছিটিয়ে খান কয়েক অযত্নের বাগান। তেমনই একটা আগাছা ঢাকা বাগানকে ঝেড়ে মুছে ১৯৯৯ সালে গড়ে তোলা হয়েছিল বিমলচন্দ্র শিশু উদ্যান। সাজানো গোছানো বাগানটা ক্রমেই হয়ে উঠেছিল, নতুন পাড়া, বিজয়নগর, বাগানপাড়া এলাকার ফুসফুস। সকাল থেকেই সেখানে শিশু-বৃদ্ধের নাগাড়ে ভিড়।
চেহারাটা ভাঙতে শুরু করেছিল, বছর দুয়েক আগে। কংগ্রেস শাসিত কান্দি পুরসভার দখলদারি নিয়ে শুরু হয়েছিল দুই গোষ্ঠীর লড়াই। দল ভেঙে অনেকেই তৃণমূলে পা বাড়ালে পুরসভার চেহারাটা আরও ফ্যাকাসে হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় কান্দি পুরসভা সামাল দেবে কে, কে হবেন পুরপ্রধান— তা নিয়েই ঘোর ডামাডোল। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে মুখ ফিরিয়ে রয়েছে প্রশাসনও। তার ফলে আস্ত শহরটার চেহারাই এখন ওই বিমলচন্দ্র শিশু উদ্যানের মতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy