কংগ্রেস নেই, বামেরাও কুপির মতো টিমটিম করে টিঁকিয়ে রেখেছে লড়াই। প্রার্থী দিয়েছে বটে, তবে বিজেপি-র তেমন হাঁকডাক নেই।
তাই পড়ে রইল তৃণমূল— শঙ্কর সিংহের হাত ধরে খোলা মাঠে তারাই এখন এ মুড়ো থেকে ও মুড়ো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ভোটের তিন দিন আগে, ফাঁকা মাঠে এখন শাসক দলের, থুড়ি শঙ্করের বোলবোলাও!
সোমবার যেমন, বেশ কয়েকশো সমর্থক নিয়ে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী। ঝেঁপে বৃষ্টি নামায় ম্যারাপের আড়ালে সবাইকে ডেকে নিয়ে খোদ প্রার্থী বলছেন, ‘‘বড়সড় প্যান্ডেল করে রেখেছি, বৃষ্টির তো এখন-তখন নেই। তাই প্রয়োজন পড়লেই ওঁদের বলছি, একটু রয়ে সয়ে মিছিল করুন।’’
নির্বাচনের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ‘রয়েসয়ে’ মিছিল করার আত্মবিশ্বাসই বলে দিচ্ছে অনেকটা এগিয়ে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে তৃণমূল। দলের মেজ-সেজ নেতা-কর্মীরাও তা বিলক্ষণ জানেন। প্রায় প্রতিপক্ষহীন এই ভোটের ময়দানে তৃণমূল কর্মীদের বাড়তি আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে সদ্য কংগ্রেস-ত্যাগী শঙ্কর। দলের জেলা নেতারাও তাই বলছেন, ‘‘ওখানে তৃণমূলের একমাত্র প্রতিপক্ষ ছিলেন শঙ্কর। তিনিই যখন আমাদের সঙ্গে, লড়াইটা করব কার সঙ্গে!’’
কুপার্স ঘুরলেই তৃণমূলের ঢালাও প্যান্ডেল চোখে পড়ছে। মিছিল হচ্ছে। অলি-গলি, রাস্তা ঘুরে সে মিছিল বিরোধী দলের মুখোমুখি হয়েছে এমন ‘অভিযোগ’ নেই! এক প্রার্থী বলছেন, ‘‘ভালই লাগছে না জানেন, এমন নিরুত্তাপ ভোট ভাল লাগে!’’
তবে, ঢিলে দেওয়ার প্রশ্ন নেই। শঙ্করের পরামর্শে মিছিলের সঙ্গেই প্রতি দিন সন্ধ্যায় কুপার্সের মোড়ে মোড়ে বসছে পথসভা। সেখানে ভিড় নেহাত কম নয়। এক নেতা বলছেন, ‘‘নাই বা থাকল প্রতিপক্ষ, শঙ্করদার টানে লোক জমছে পথসভায়।’’
১১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী পিন্টু দত্ত বলছেন, “আমি কর্মীদের নিয়ে রোজ প্রচারে বেরোচ্ছি। আবার নিজেও বাড়িতে বাড়িতে প্রচার করছি। এমনই নির্দেশ রয়েছে দলের। ভাল সাড়া পাচ্ছি।’’ এ কাজটাই এ যাবত কংগ্রেসের কর্মীরা করতেন। তারা নেই। পুরনো এক কংগ্রেসমনস্ক প্রবীণ বলছেন, ‘‘সব স্মৃতি হয়ে গেল গো, কংগ্রেস না থাকলে ভোট হয়!’’
এরই মাঝে সিপিএমের প্রার্থীরা পথসভা করছেন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী হরিদাসী বিশ্বাস বিড়ি শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করার ফাঁকে বলছেন, ‘‘ভালই সাড়া পাচ্ছি, কে বলল আমারা পিছিয়ে!’’ কুপার্স শহর বিজেপি সভাপতি ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী লিটন বিশ্বাস ও বলছেন, “সকাল-সন্ধে প্রচার করছি। সাড়া মিলছে না বলে অপপ্রচার করছে তৃণমূল।’’ প্রচার-অপপ্রচারের মাঝের দু’টো দিন দিবারাত্র ফুটছে কুপার্স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy