Advertisement
০৪ মে ২০২৪

গ্রামের ‘ত্রাতা’ রুখতে আন্দোলনে গঙ্গাধরী

গ্রামের গায়ে যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, আশপাশের গ্রামের লোক তাকে চিনত, ‘ভুতের হাসপাতাল’ বলে। তিন বছর ধরে চিকিৎসক নেই। সামান্য কাটা-ছেঁড়া কোনওরকমে সামলে দেন কম্পাউন্ডার।

চিকিৎসককে-ঘিরে। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসককে-ঘিরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নওদা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

রোগ-বালাই থেকে প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করা প্রসূতি— গঙাধরীর ঠিকানা ছিল চোদ্দো কিলোমিটার দূরের আমতলা গ্রামীণ হাসপাতাল।

গ্রামের গায়ে যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, আশপাশের গ্রামের লোক তাকে চিনত, ‘ভুতের হাসপাতাল’ বলে। তিন বছর ধরে চিকিৎসক নেই। সামান্য কাটা-ছেঁড়া কোনওরকমে সামলে দেন কম্পাউন্ডার।

সেই হাসপাতালের চেহারাই আমূল বদলে দিয়েছিলেন অধের্ন্দুশেখর পন্ডিত। বছর খানেক আগে প্রায় বন্ধ সেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে আশপাশের পাঁচ গ্রামের ত্রাতা হয়ে উঠেছিলেন তিনি। স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, তাঁর জন্যই হাসপাতালে বসেছিল জলের ট্যাঙ্ক, পৌঁছয় বিদ্যুৎ। সপ্তাহে পাঁচ দিন, নিয়মিত সকাল সাড়ে ন’টা থেকে দুপুর দু’টো— রোগী দেখতেন তিনি। সঙ্গে জুটত নিখরচায় ওষুধ। গ্রামের বাসিন্দারা সমস্বরে বলছেন, ‘‘সবই ওই ডাক্তারবাবুর কল্যাণে। প্রয়োজনে রোগীদের বাড়ি গিয়েও দেখতেন। খোঁজ নিতেন, রোগীরা ঠিকঠাক ওষুধ খাচ্ছেন কিনা।’’ তিনটি ব্লকের প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষের জীবনে যেন স্বস্তি এনে দিয়েছিলন ‘ডাক্রারবাবু’!

তাঁর বদলির চিঠি আসতেই শনিবার, কয়েকশো গ্রামবাসী নওদা ব্লক মেডিক্যাল অফিসার মুকেশ সিংহের সঙ্গে দেখে করেন। তাঁদের কথায়, ‘‘আমরা আমাদের ডাক্তারকে ছাড়বো না।’’ পরে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে গিয়ে তাঁরা স্মারকলিপিও দেন। কিন্তু দফতর নিরুপায়। চিকিৎসকের অভাব, তাই অর্ধেন্দু বাবুকে বদলি করতেই হবে, সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। অর্ধেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমি এক বছর চার মাস ছিলাম। গ্রামের এক জন হয়ে গিয়েছিলাম। ওঁদের খারাপ তো লাগবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Doctor Village Hospital হাসপাতাল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE