Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মেয়েকে দুল দিতে এসে খুন হলেন তরুণী

অনেক দিন মেয়ের সঙ্গে দেখা হয়নি। বুধবার রাতে মেয়েকে দেখতে নিজের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন তিনি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাঁসখালি  শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৪
Share: Save:

অনেক দিন মেয়ের সঙ্গে দেখা হয়নি। বুধবার রাতে মেয়েকে দেখতে নিজের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। বছর বারোর মেয়ের জন্য বাজার থেকে কিনেছিলেন চুড়ি, টিপ, কানের দুল ও চাউমিন। বৃহস্পতিবার সকালে রাস্তার ধারের খেতে দেহ মেলে জয়ন্তী বিশ্বাসের (৩৪)। হাঁসখালির বেনালির ওই ঘটনার পরে মৃতার পরিবার জয়ন্তীর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির চার জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে বধূ নির্যাতন ও খুনের মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ জয়ন্তীর শাশুড়িকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চোদ্দো আগে কৃষ্ণগঞ্জের ময়রাপাড়ার বাসিন্দা জয়ন্তীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বেনালির সন্তোষ বিশ্বাসের। সন্তোষ চেন্নাইয়ে একটি হোটেলে কাজ করেন। তাঁদের বছর বারোর মেয়েও আছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক অশান্তি চলতে থাকে। বছর দু’য়েক আগে অসুস্থও হয়ে পড়েন জয়ন্তী।

জয়ন্তীর বাবাবর বাড়ির লোকেদের দাবি, শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়িতে চলে এসেছিলেন জয়ন্তী। কিন্তু কালীপুজোর দিন তাঁকে পাকাপাকি ভাবে কৃষ্ণগঞ্জের বাপের বাড়িতে রেখে যান সন্তোষ। কিন্তু মেয়েকে নিজেদের কাছেই রেখে দেন। মাঝে মধ্যেই মেয়েকে দেখতে শ্বশুরবাড়ি আসতেন জয়ন্তী। কিন্তু তাঁকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হতো না বলে অভিযোগ।

বৃহস্পতিবারও রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মেয়ের জন্য চুড়ি, টিপ, কানের দুল আর চাউমিন নিয়ে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু বাড়িতে উঠতে দেওয়া হয়নি। সন্তোষও এ দিন বাড়িতে ছিলেন না। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, রাতে খুব অশান্তি হয়েছিল। তারপর থেকে জয়ন্তীর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। সকালে তার দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এই ঘটনার পর থেকেই জয়ন্তীর মেয়েকে নিয়ে এলাকা ছাড়া হয়ে গিয়েছে সন্তোষের দুই ভাই। তাঁদের মধ্যে একজন আবার দৃষ্টিশক্তিহীন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের সামনে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। একজন বৃদ্ধা ও একজন দৃষ্টিশক্তিহীনকে সঙ্গে নিয়ে কারও পক্ষে কি জয়ন্তীকে খুন করে বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ফেলে রেখে আসা সম্ভব? তাহলে কি এই খুনের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত? নাকি এর পিছনে লুকিয়ে আছে অন্য কোনও ঘটনা?

জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। কী ভাবে খুন করা হয়েছে সেটাও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hanskhali Woman Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE