সতর্কতা উড়িয়ে যান চলাচল। —ফাইল চিত্র।
সংস্কার কাজের জন্য আজ, সোমবার থেকে জঙ্গিপুরে ভাগীরথী নদীর সেতুটি সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিচ্ছে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর।
২০০১ সালের ডিসেম্বরে জঙ্গিপুরে ভাগীরথীর উপর দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি চালুর ফলে লালগোলা, জিয়াগঞ্জ, লালবাগ ও বহরমপুরের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়ে যায়। দৈনিক এই সেতু দিয়ে হাজার খানেক যানবাহন যাতায়াত করে।
ইতিমধ্যে জঙ্গিপুর ও রঘুনাথগঞ্জের দুই শহর পাড়ে সেতুর নীচে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে কয়েকশো দোকান-পাট। সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হবে জানিয়ে বার বার সেই সব দোকানঘরগুলি তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পূর্ত (সড়ক) দফতর। গত ১৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে জঙ্গিপুর শহর পাড়ে ওই সেতুর নীচে অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা ১৩টি দোকান ভয়াবহ আগুনে ভস্মীভূত হওয়ার সময় সেতুর তিনটি পিলারের ৬টি বেয়ারিং পুড়ে গিয়ে পুরোপুরি অকেজো হয়ে যায়। এরপরই সেতুটিকে বিপজ্জনক ঘোষণা করে পূর্ত ( সড়ক) দফতর সেতুর উপর দিয়ে ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু সেই বিধি-নিষেধের তোয়াক্কা করেনি কেউ। গত সাত মাস ধরে ভারী যানবাহন চলছে আগের মতো। ইতিমধ্যে সেতুর পূর্ব প্রান্তের দু’টি পাটাতনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারী যানের ধাক্কায় সেগুলি নীচে ভেঙে পড়তে পারে যে কোনও মুহূর্তে। জঙ্গিপুর পূর্ত (সড়ক) দফতরের সহকারী বাস্তুকার রাজেন্দ্রপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের পর সেতুর তিনটি পিলারের উপর বসানো ৬টি বেয়ারিংই পুড়ে গিয়ে অকেজো হয়ে গিয়েছে। পিলারের উপর বসানো গাডারগুলিও ঠিক ভাবে কাজ করছে না। বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিদরা অবিলম্বে সেতুর পূর্ব পাড়ের ৬টি বেয়ারিং বদলানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সেই বেয়ারিং বদলের কাজ সোমবার থেকে শুরু করতেই হবে। না হলে বর্ষার সময় সেতুটি চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।”
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুর দু’টি পাটাতন সাময়িক ভাবে তুলে ফেলতে হবে। এর জন্য পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে যান চলাচল। এমনকী হাঁটাচলাও করা যাবে না।
এই প্রেক্ষিতে জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম সেতু বন্ধের ব্যাপারে আগাম নোটিস কেন দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “সেতু মেরামতে ৫ দিন সময় লাগবে বলে জানানো হলেও বর্ষায় কাজ ঠিক সময়ে শেষ করা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এই ব্যাপারে আগাম নোটিস দিয়ে জানিয়ে দিলে হয়রানি কমত।”
এ দিকে, সেতুর নীচে দোকানঘরগুলো কবে উচ্ছেদ হবে তার জবাব মেলেনি। রাজেন্দ্রবাবু বলেন, “এখনও সেতুর নীচে বহু দোকান রয়েছে। সেগুলি সরিয়ে দিতে বার বার পদক্ষেপ করা হলেও তা সফল হয়নি। এর ফলে সেতুটির হাইড্রলিক পদ্ধতি ঠিক মতো কাজ করতে পারছে না। তা ছাড়া নতুন করে ওই সব দোকানে আগুন লাগলে সেতুটি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy