কোচবিহারে এসে একাধারে রাজবংশীদের মন জয় এবং সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের ক্ষোভ দূর করার চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার এখানে প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি রাজবংশী উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের কথা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি সাবেক ছিটমহলবাসীদের জন্য দ্রুত পাকা ঘর তৈরির প্রতিশ্রুতিও দেন। এ দিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এত দিন ধরে এত জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করছেন মমতা। এই প্রথম তেমন বৈঠকে হাজির রইলেন অভিষেক। বৈঠকে তিনি বসেছিলেন মঞ্চের নীচে একেবারে প্রথম সারিতে। পরে সন্ধ্যায় অভিষেককে নিয়ে মদনমোহন বাড়িতে যান মমতা। তার আগে অবশ্য কোচবিহারকে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে রয়েছে রাজবংশী উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের ঘোষণাও।
রাজবাড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠকের পরে মমতা কথা বলেন রাজ পরিবারের সদস্য কুমার সুপ্রিয় নারায়ণ-সহ এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে। পরে মমতা বলেন, ‘‘আমি ওঁদের বলেছি রাজ পরিবার থেকে তিন-চারটে নাম দিতে। বাকি নাম আমরা দেব।’’
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই পর্ষদ গঠন নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ও পাল্টা দাবি উঠতে শুরু করেছে। কুমার সুপ্রিয় নারায়ণ যেমন উচ্ছসিত। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে উন্নয়ন পর্ষদের দাবি জানাই। তিনি সেটা দাবি মেনে নেওয়ায় আমরা খুশি। এতে উত্তরবঙ্গ জুড়ে উন্নয়ন হবে।” স্বাগত জানিয়েছেন কেপিপি সভাপতি অতুল রায়ও। তাঁর কথায়, “কেপিপি দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের দাবিতে লড়াই করছে। তাতে অনেকেই মারা গিয়েছে। সে দিক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ওই উদ্যোগ মন্দের ভাল।”
গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বংশীবদন বর্মন দাবি করেছেন, এই পর্ষদ রাজবংশী মানুষের হাতে থাকা জরুরি। তাঁর কথায়, ‘‘রাজবংশী মানুষের মঙ্গল হয়, এমন লোকদের নিয়ে পর্ষদ গঠন করলে তবেই তা সফল হবে।”
কোচবিহার জেলা তৃণমূল অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় খুশি। এক জেলা নেতার কথায়, “রাজবংশী মানুষদের জন্যে মুখ্যমন্ত্রী এর আগে ভাষা অ্যাকাডেমি করে দিয়েছেন। এ বারে উন্নয়ন পর্ষদের ঘোষণা করলেন।’’ তাঁরা মনে করছেন, এই ঘোষণা তাঁদের জমি শক্ত করবে।
এর পাশাপাশি কোচবিহারে দু’টি মেডিক্যাল কলেজ, দশটি হিমঘর, আটটি রাইসমিল, ভুট্টা, টমেটো নিয়ে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প তৈরির কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy