সহজে: পাঁচ টাকার কয়েন দিলে মিলছে ন্যাপকিন। নিজস্ব চিত্র
শিলিগুড়ি শহরের নামকরা স্কুলগুলো যা করতে পারেনি সেটাই করে দেখাল মুরলিগঞ্জ হাই স্কুল। রবিবার শিলিগুড়ির বিধাননগরের প্রত্যন্ত এলাকার ওই স্কুলে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে স্যানিটরি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন বসানো হল। পাঁচ টাকার কয়েন ফেলে সহজেই ছাত্রীরা স্যানিটরি ন্যাপকিন পাবে তা থেকে। এ দিন পর্যটনমন্ত্রীর গৌতম দেব তার উদ্বোধন করেন।
যে স্কুলে ছাত্রীরা এক সময় বসবার জন্য চটের বস্তা হাতে নিয়ে স্কুলে আসত, গত দেড় দশকে সেই স্কুলের ভোল ক্রমেই আমূল বদলে গিয়েছে। ২০১৩ সালে নির্মল বিদ্যালয় শিশুমিত্র এবং যামিনী রায় সম্মান পায় তারা। ইউনিসেফ থেকে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদল এসেও ঘুরে দেখে গিয়েছে তাদের কর্ম পদ্ধতি। স্কুল পরিচালনার নানা ক্ষেত্রে নজির তৈরি করেছে তারা। ছাত্রীদের সুবিধার্থে স্যানিটরি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন জেলার মধ্যে এই স্কুল প্রথম তো বটেই রাজ্যে হাতে গোটা কয়েকটি স্কুলে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক সামসুর আলম বলেন, ‘‘এখন ‘প্যাডম্যান’ নিয়ে খুব হইচই হচ্ছে। আমাদের স্কুলে কিন্তু আমরা ছাত্রীদের আগেই বিষয়টি বুঝিয়েছি। এবং স্কুলেই স্যানিটরি ন্যাপকিন দেওয়ার বিষয়টি ২০১৩ সালেই চালু করি। তখন স্কুলের নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে আড়াই টাকা দিয়ে একটি ন্যাপকিন পেত তারা। এখন আমরা ভেন্ডিং মেশিন চালু করতে পেরে খুশি।’’ তাঁর দাবি, গ্রামের ছাত্রীদের মধ্যে ন্যাপকিনের ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা ছিলই না। শুরুতে শিক্ষকেরাই ছাত্রীদের তা বোঝাতেন বলে জানান সামসুরবাবু।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ২৪ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে তারা ওই ভেন্ডিং মেশিন বসিয়েছেন। পাঁচ টাকার কয়েন ফেললে আপাতত একটি স্যানিটরি ন্যাপকিন মিলছে ভেন্ডিং মেশিন থেকে। নতুন ওই ব্যবস্থায় খুশি সঙ্গীতা পাল, ঈশীতা সাহাদের মতো ছাত্রীরাও।
পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘স্কুলের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ ধীরে ধীরে হচ্ছে। ল্যাবরেটরির উন্নয়নে ইতিমধ্যেই ৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আরও উন্নয়ন নিয়েও কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করব।’’ এ দিন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের দফতরের উদ্যোগে ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি স্কুলে একটি ইন্ডোর স্টেডিয়াম এদিন উদ্বোধন হয়। তবে পরিকাঠামোটি ছোট হওয়ায় তা সম্প্রসারণ করে বড় করার দাবি উঠেছে। অন্য দিকে মুরলিগঞ্জ মোড়ে সরকারি বাস না দাঁড়ানোয় দূর থেকে আসা পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে অভিযোগ। এদিন মঞ্চে মন্ত্রীর কাছে বাস দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করতে আর্জিও জানান প্রধান শিক্ষক। সেই সঙ্গে হস্টেল চালুর দাবিও উঠেছে। মন্ত্রী বিষয়গুলো দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy