Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

উত্তরের কড়চা

ওপার বাংলার ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে এ পার বাংলার কোচবিহারের প্রেমেরডাঙা। কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে এক সূত্রে বাঁধা পড়েছে মন্ডার সৌজন্যে। বাংলাদেশের বিখ্যাত মুক্তাগাছার মন্ডার মত কোচবিহারেও সমান জনপ্রিয় প্রেমেরডাঙার মন্ডা। রাজ্যের অন্য জেলাতেও ওই মন্ডার কদর কম নয়। কয়েক বছর আগে দুর্গাপুজোর মুখে আমেরিকাতেও পাড়ি মন্ডা।

বাংলাদেশ থেকে কোচবিবারে। নিজস্ব চিত্র।

বাংলাদেশ থেকে কোচবিবারে। নিজস্ব চিত্র।

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০৪
Share: Save:

মন্ডা ২০০

প্রেমেরডাঙার প্রাণের মেঠাই

ওপার বাংলার ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে এ পার বাংলার কোচবিহারের প্রেমেরডাঙা। কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে এক সূত্রে বাঁধা পড়েছে মন্ডার সৌজন্যে। বাংলাদেশের বিখ্যাত মুক্তাগাছার মন্ডার মত কোচবিহারেও সমান জনপ্রিয় প্রেমেরডাঙার মন্ডা। রাজ্যের অন্য জেলাতেও ওই মন্ডার কদর কম নয়। কয়েক বছর আগে দুর্গাপুজোর মুখে আমেরিকাতেও পাড়ি মন্ডা।

জনশ্রুতি রয়েছে, মন্ডার ইতিহাস প্রায় ২০০ বছরের। মুক্তাগাছার বাসিন্দা গোপাল পাল নাকি স্বপ্নে-পাওয়া রেসিপি মেনে মন্ডা তৈরি করেছিলেন। সে সময় জমিদারদের পারিবারিক সমস্ত অনুষ্ঠানে মন্ডা ছিল প্রায় আবশ্যিক। এখন গোপাল পালের উত্তরসূরী রমেন্দ্রনাথ পাল ওই কারবার সামলাচ্ছেন। অন্যদিকে এপার বাংলার প্রেমেরডাঙায় মন্ডা তৈরির পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন মুক্তাগাছার একসময়কার বাসিন্দা প্রয়াত যতীন্দ্রমোহন দে’র নাতি তরুণ কুমার ধর। মুক্তাগাছার ওই মন্ডা তৈরির প্রতিষ্ঠানে কারিগর ছিলেন যতীন্দ্রমোহনবাবু। দেশভাগের সময় সেখান থেকে এপার বাংলায় চলে আসেন। প্রেমেরডাঙায় শুরু করেন মন্ডা তৈরির ব্যবসা। ১৯৯২ সালে যতীন্দ্রমোহনবাবুর মৃত্যুর পরে তাঁর মেয়ের ঘরের নাতি তরুণবাবুর দাদুর কাছ থেকে শেখা কৌশল মেনে প্রেমেরডাঙায় ওই কারবার চালাচ্ছেন। প্রাথমিক শিক্ষকতার ফাঁকে তিনি কারবার সামলান। তরুণবাবুর দাবি, “দাদু আমাকেই মন্ডা তৈরির কৌশল শিখিয়েছেন। পারিবারিক ঐতিহ্য ভেবে কারবার ধরে রাখার চেষ্টা করছি।”

দৈনিক শ’তিনেক মন্ডা তৈরি হয়। প্রেমেরডাঙার কারখানায় তার মধ্যে ১০ টাকা প্রতি পিস দামের একশোটি। ৫ টাকা প্রতি পিস দামের প্রায় দুশোটি প্রাথমিক স্কুলে যাওয়ার আগে সকাল সকাল প্রায় ৪০ কিলো দুধ দিয়ে তৈরি ছানা পাক দিয়ে ওই মন্ডা তৈরি করেন তিনি। চাহিদা অবশ্য অনেক বেশি কিন্তু সময় কোথায়? তা ছাড়া এখন ততটা ঝুঁকি নিতে চাই না বলছিলেন তরুণবাবু। মন্ডা হল, দানাদার ও কিছুটা আঠালো সুস্বাদু মিষ্টি। দেখতে খানিকটা সন্দেশের মত। তবে সন্দেশের তুলনায় বেশি করে পাক দেওয়া হয় ছানায়। ঐতিহ্যের মন্ডা এখনও স্বমহিমায় থাকলেও কারবারে কিছু বদল এসেছে। আগের মত প্রতি কিলো দরে মন্ডা বিক্রির রেওয়াজ আর নেই। মূল্য বৃদ্ধির বাজারে প্রতি পিস হিসেবে কেনা ছাড়া উপায় বা কি! কেজি হিসাবে কেনার সাধ থাকলেও সাধ্য নেই অনেকের তা মানছেন ক্রেতাদের একাংশ। তার পরেও মন্ডা আজও দুই বাংলার মিলনসূত্র।

অর্কিডের আশ্রয়

নাগরাকাটার কলাবাড়িতে বারোমাস ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ চলছে। তবে মানুষের নয়, অর্কিডের। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এই বিরল কর্মপ্রচেষ্টা চালাচ্ছেন নাগরাকাটা ব্লকের কলাবাড়ি টি ই উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আশিসকুমার রায়। ডুয়ার্সের পরাশ্রয়ী অর্কিডের প্রজাতির সংখ্যা একশোরও বেশি। এদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ডেনড্রোরিয়াম, সিম্বিডিয়াম, একাম্পে, থুনিয়া, লুসিয়া প্রভৃতি।

—নিজস্ব চিত্র।

এ সব ফুলের সৌন্দর্য যুগ যুগ ধরে মুগ্ধ করে রেখেছে মানুষকে। কিন্তু গাছ কাটা পড়ছে, ঝড়ের জন্যও ভেঙে পড়ছে গাছ। ফলে অর্কিড আশ্রয়হীন হয়ে দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। যে সব গাছ পড়ে গিয়েছে বা নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেখান থেকে অর্কিডদের সংগ্রহ করেন আশিসবাবু। তারপর অতি যত্নে তাদের ফের বসিয়ে দেন গ্রামের পথের ধারে থাকা কোনও বড় গাছে, কখনও বা ছাত্রছাত্রীর বাড়ির গাছে। ছুটির দিনে স্যারের এক ডাকেই জড়ো হয় অবিনাশ, রোশন, অভয়, ববিতা ও মুনুর মতো ছাত্রছাত্রীরা। অবিনাশের কথায়, “স্যারের দ্বারা পরিচালিত অর্কিড সংরক্ষণের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত ও গর্বিত।” এই কর্মকাণ্ডের উচ্চ প্রশংসা করেন ‘দ্য অর্কিড সোসাইটি অব ইন্ডিয়া’-র সম্পাদক অধ্যাপক এস পি ভিজ এবং সভাপতি অধ্যাপিকা প্রমীলা পাঠক।

সোনার আভায়

কেউ অধ্যক্ষ কেউ বা অধ্যাপক। স্কুলে শিক্ষকতার দায়িত্ব সামলেছেন অনেকেই। এডিএম, বিডিও-র মতো প্রশাসনিক পদেও রয়েছেন কেউ কেউ। ২৮ অগস্ট কিন্তু পোশাকি পরিচয় ঝেড়ে ফেলে সকলে হাজির কলেজ প্রাঙ্গণে। ওঁরা সকলেই যে শিলিগুড়ি বিএড কলেজের প্রাক্তনী। কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উদ্যাপনে কী করে দূরে থাকতে পারেন? “তখন বেসরকারি কলেজের এত রমরমা ছিল না। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদহ আর ওই শিলিগুড়ি বি এড কলেজ। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কাছাকাছি বলে তখন এটাই ছিল প্রথম পছন্দের,” মুগ্ধতা প্রাক্তনীদের স্বরে। গান, কবিতা, খাওয়াদাওয়া, সব কিছুতে জড়িয়ে রইল নস্টালজিয়া। টিনের চাল উঠে গিয়ে তিনতলা হয়েছে কলেজভবন, চায়ের দোকানটি আয়তনে বেড়েছে। কাঁচা রাস্তা হয়েছে পিচের সড়ক। দক্ষিণ দিকের নারকেল গাছগুলি উধাও, মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে গার্লস হস্টেল। সুবর্ণজয়ন্তীর সোনার আভায় সে সবই উজ্জ্বল।

বিচিত্র মাশান

মাশান পুজো। নিজস্ব চিত্র।

কখনও ঘোড়ায় চড়ে আসেন, কখনও তাঁর বাহন মাছ। নৈবেদ্যে দই-চিঁড়ে, চালভাজা পেয়েও খুশি। আবার পোড়া চ্যাং মাছেও আপত্তি নেই। রূপও নানা রকম। জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিংয়ে মাশান তৈরি হয় শোলা দিয়ে, কোচবিহারে মাটির মূর্তি, আবার নেপালে মাটির ঢিবি, বা ‘থাপানা।’ সমতলে তেমন পরিচিতি না থাকলেও, ‘মাশান’ জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দার্জিলিং, দুই দিনাজপুর ছাড়াও পুজো পান নেপাল, অসম এবং মেঘালয়ের কিছু জেলাতে। সম্প্রতি তুফানগঞ্জে ১৮-হাত মাটির মূর্তি তৈরি করে মাশানপুজো হয়ে গেল। এ রাজ্যে মূলত রাজবংশীরা মাশানের পুজো করেন। বিচিত্র এই দেবতার ১৮ রকম রূপ আছে। তাঁকে জড়িয়ে কত না গল্পকথা। কাউকে মাশান ‘ভর’ করলে মন্ত্রগান শোনানো হয়। লোকনাট্যের আঙ্গিকের গান, আর সেই ‘মিউজিক থেরাপি’ রোগীকে নাকি দিব্যি সুস্থ করে তোলে। এক জেলার মাশান যদি গান শুনে তুষ্ট হন, তো অন্য জেলার মাশান তুষ্ট মুখোশ পুজোয়। মাশান পুজোর উৎস প্রচলিত বিশ্বাস—এই পুজো করলে অমঙ্গল থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তবে লোকসংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ দীপককুমার রায়ের মতে, লোকায়ত সংস্কৃতির পরিচয়ও বহন করে মাশান। মাশানের ছবি, শোলার মূর্তি বা মুখোশে বিভিন্ন জনজাতির নান্দনিকতার প্রকাশ লক্ষ করা যায়।

কলমকারি

সবাই তাঁকে ডাকে, ‘পেন মাস্টার।’ হবে না কেন, মালদহ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক অমিতাভ দাসের সংগ্রহে যে দুশোর উপর ফাউন্টেন পেন। মালদহ শহরের রামকৃষ্ণপল্লিতে বছর তেতাল্লিশের অমিতাভবাবুর ঝুলিতে ৫০ বছরের পুরোন সোনার নিবের ওয়াটারম্যানের ফাউন্টোন পেন আছে। আবার ৩৫ বছরের পুরনো চিনের ‘হোয়াইট ফেদার’ কলমও রয়েছে। ফ্রান্সের স্টাইপেন নিবের কলম, জার্মান শেপার্ড, সোনার প্লেটিং-করা উইলসন পেন, জাপানি লেকোস্ট কলম, কী নেই। রয়েছে সম্পূর্ণ কাচের ওয়াটারম্যান কলমও। প্রতিটি কলমই চালু রয়েছে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তিনি সেগুলি ব্যবহারও করেন। ছাত্ররা ডটপেন দিয়ে লিখলে বকাবকিও করেন—ওতে হাতের লেখা খারাপ হয়ে যায়। ঝর্না কলমের দিন গিয়েছে, মানতে রাজি নন পেন মাস্টার।

আম আদমি

‘ফজলি’ আমের সঙ্গে ‘গুটি’ আমের সংমিশ্রণ তৈরি করেছেন ‘আমিন ভোগ’ নামে নতুন প্রজাতির আম। একের পর এক নতুন আমের প্রজাতি তৈরিতে মেতে রয়েছে মালদহের গাজলের রাইখাদিঘির জাভেদ আমিন ও বাসেদ আমিন। নিজেদের প্রায় ১৪ বিঘা আম বাগানে স্রেফ ভেষজ সার দিয়ে আম ফলান। এ বার দিল্লি পর্যটন দফতরের উদ্যোগে, সারা ভারত আম উৎসবে তাদের বাগানের ল্যাংড়া ও আম্রপালি ‘ভারতসেরা’ সম্মান পেয়েছে। তবে তাতেই থেমে থাকেননি দুই ভাই। নতুন নতুন আমের প্রজাতি তৈরি করছেন জাভেদ আমিন ও বাসেদ আমিন। তাঁরা জানান, তাঁদের বাবা-ই আমচাষের পথ প্রদর্শক। বাবার কাছ থেকে হাতে-কলমে শিখে ‘আমিন’ আমের প্রজাতি তৈরি করেছেন তাঁরা। এরপর আমিন ১, আমিন ২-সহ এখনও পর্যন্ত পাঁচ রকমের নতুন প্রজাতির আমের সৃষ্টি করেছি। আমিন ভাইদের কাজ দেখে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের জেলা উপ-অধিকর্তা প্রিয়রঞ্জন সানিগ্রাহী বলেন, “ওঁরা আমাদের গর্ব।”

ত্রিতীর্থের সারথি হরিমাধব

ছাব্বিশ অগস্ট, ১৯৬৯। বালুরঘাটে যাত্রা শুরু নাট্যদল ত্রিতীর্থের। এখন প্রয়াত প্রভাস সমাজদারের বাড়ির ছাদে শুরু হয়েছিল ‘পুতুল খেলা’ নাটকের মহড়া। সেই শুরু। ‘পুতুল খেলা’ থেকে সাম্প্রতিক নাটক ‘বাণপ্রস্থ’ পর্যন্ত ত্রিতীর্থ প্রযোজনা করেছে পঁয়ষট্টিটি নাটক। সেই যাত্রাপথে ত্রিতীর্থের সারথি হরিমাধব মুখোপাধ্যায়। এতদিন ধরে বাংলা নাটকের সঙ্গে সফল ভাবে জড়িয়ে থাকার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি জানালেন, নাটক এক অত্যন্ত জটিল যৌথ শিল্প। অনেকানেক মানুষের অক্লান্ত, নিরন্তর শ্রমের ফসল। দুরূহ যে বিষয়টি নাটককে অন্য শিল্প মাধ্যম থেকে স্বতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মর্যাদা দিয়েছে, তা হল, নাটকের কাজটি অন্যকে দিয়ে করিয়ে নিতে হয়। এই করিয়ে নেওয়া পর্বটি শুধু যে জটিল তাই নয়। এখানে সম্পর্ক, সম্বন্ধ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আত্মসম্মান, আনুগত্য হাজারো বিষয় জড়িত। নাটক সফল হলে শিল্পী পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন। পর্দার আড়ালে পরিচালক ক্রমশ হয়ে ওঠেন স্বরাট। কিছুটা বেদনার স্বরেই বলেন, “দল ভাঙে, দল গড়ে। এ ভাবে নাটক চলে। আমিও চলেছি। চলতে চলতে তিয়াত্তরে পৌঁছেছি। এখন চার দিকে কত রকম নাটক হয়ে চলেছে। কত সাহসী-ব্যতিক্রমী প্রযোজনা। যা আমার বিবেচনায় প্রায় অসম্ভব। বিস্মিত হতবাক আমি সে সব দেখি, আর ভাবি আমি কত-কতটা পিছিয়ে আছি, আমার অক্ষমতা কত প্রকট।” সেই সঙ্গে এই প্রবীণের পরামর্শ, “আজ এখন এই মুহূর্তে যা ঘটছে, তা নিয়ে এক্ষুনি একটা নাটক করে নিজেকে সময় সচেতন প্রাসঙ্গিক প্রমাণ করার দরকার আছে কি? বরং একটু অপেক্ষা করা ভাল। সময় একটু বয়ে যাক না। নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিরপেক্ষ ভাবে একটু ভাবনার সময় দেওয়া যাক না। নাটক তা হলে অনেক গভীরতা পাবে এবং তখনই তা নিরন্তন হয়ে উঠবে।” প্রতিষ্ঠা দিবসে নির্বাচিত কিছু নাটকের অংশ বিশেষ অভিনীত হয়। ত্রিতীর্থের অভিনেতা অভিনেত্রীরা মঞ্চস্থ করেন মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের নাটক ‘পোকা মাকড়ের কুটুম’। পঙ্কজ শীল, কিঙ্কর দাস, শতাব্দী নাথ, শুভঙ্কর রায়ের অভিনয় দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

north karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE