ঘাতক সেই ট্রাক। —নিজস্ব চিত্র।
একসঙ্গে স্কুলে যাবে বলে বন্ধুদের জন্য অপেক্ষা করছিল পাঠভবনের ছাত্রটি। আচমকা কয়লা বোঝাই ছোট ট্রাক এসে ধাক্কা মারে শুদ্ধসত্ত্ব চট্টোপাধ্যায় (১৭) নামে একাদশ শ্রেণির ছাত্রটিকে। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে।
বোলপুরের চিত্রা মোড়ে, শনিবার সকালে ওই দুর্ঘটনার পরেই চালক ও খালাসি চম্পট দেয়। পুলিশও আসে, তবে প্রায় চল্লিশ মিনিট পরে। অভিযোগ, রক্তাক্ত ছাত্রটিকে হাসপাতালে না পাঠিয়ে তাদের তৎপরতা শুরু হয় কয়লা বোঝাই গাড়িটিকে নিয়ে। তা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে জনতা। পুলিশের সামনেই এ বার ট্রাকটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জ্বলতে থাকে ট্রাকটি। স্কুলছাত্রের দেহ আটকে শুরু হয় অবরোধও।
শান্তিনিকেতন-বোলপুর রোডের ব্যস্ত তেমাথা চিত্রা মোড়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, পুলিশের নাকের ডগা দিয়েই ওই রাস্তায় দিনভর ছুটে চলে বেআইনি খনির কয়লা বোঝাই ট্রাক। দুবরাজপুর, খয়রাশোল ও কাঁকরতলা থেকে ছোট ট্রাকে কয়লা বোঝাই করে তা পাচার হয় বর্ধমান, মুর্শিদাবাদে। এ দিনও ওই ট্রাকে ধানের তুষ ঢেকে কয়লা পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ স্কুলে যাবে বলে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের জন্য অপেক্ষা করছিল একাদশ শ্রেণির ছাত্রটি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কয়লা বোঝাই ট্রাকটি পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারে তাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুদ্ধসত্ত্বকে ধাক্কা মেরে গাড়িটি কিছুটা হিঁচড়ে নিয়ে যায় দেহটা। তার পরেই ট্রাক থেকে নেমে উধাও হয়ে যায় চালক ও খালাসি। জনতা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পরে দমকল এসে তা নেভানোর চেষ্টা করলে আর এক দফা উত্তেজনা ছড়ায়। বীরভূমের এসপি অলোক রাজোরিয়া বলেন, “গাড়ির চালক-খালাসি পলাতক। বোলপুর শহরের রাস্তায় বেআইনি কয়লা পাচারের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পাঠভবনের বিজ্ঞান শাখার ছাত্র শুদ্ধসত্ত্বর দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পাঠভবনের ছাত্রছাত্রীরা। আসেন অধ্যক্ষ পার্থ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বরাবর ভাল রেজাল্ট করত শুদ্ধসত্ত্ব। এ মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy