তেরো বছরের এক কিশোরীকে মুখে কাপড় গুঁজে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল বান্দোয়ান থানা এলাকায়। ওই ঘটনায় পুলিশ পড়শি সাত যুবককে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের বুধবার পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশের দাবি, জেরাতে ধৃতেরাও গণধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় ওই কিশোরী বাড়ির সামনে একটি পুকুরে গিয়েছিল। সে পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছে, ফেরার পথে অন্ধকারে পড়শি কয়েকজন যুবক তার পথ আগলে দাঁড়ায়। সে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এক যুবক তার মুখ চেপে ধরে। অন্যেরা হাত-পা চেপে ধরে। হুমকি দেয়, চেঁচালেই মেরে ফেলবে। এক জন তার মুখের ভিতরে কাপড় গুঁজে দেয়। কিশোরী জানিয়েছে, পড়শি যুবকেরা তার পরিচিত। কিন্তু তারা যে এমন কাণ্ড ঘটাতে পারে, তা অনুমান করতে পারেনি। এরপর ওরা কিশোরীকে ঝোপের আড়ালে নিয়ে গিয়ে একে একে ধর্ষণ করে। এ দিকে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামার পরেও মেয়ে ঘরে না ফেরায় কিশোরীর মা আলো হাতে নিয়ে তাকে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন। মেয়েকে ধ্বস্ত অবস্থায় ফিরতে দেখে মায়ের সন্দেহ হয়। বাড়ি ফিরে জিজ্ঞাসা করতে কিশোরী সব কথা মাকে খুলে বলে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁরা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। কিশোরীর মা পুলিশকে জানিয়েছেন, বাড়িতে পুরুষ কেউ না থাকায় অভিযোগ জানাতে দেরি হয়েছে। কিশোরীর বাবা বাড়িতে থাকলেও দিনের বেশির ভাগ সময় নেশা করে পড়ে থাকেন। সোমবার রাতে কিশোরীর কাকা বান্দোয়ান বাজার থেকে কাজ সেরে ফিরলে তাঁকে সব জানানো হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত যুবকেরা বাইরে ইটভাটায় ও চালকলে কাজ করে। সম্প্রতি ওরা বাড়ি ফিরেছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গুরুতর কাণ্ড ঘটে গিয়েছে বুঝে গ্রামের কয়েকজন মাতব্বর আসরে নামেন। তাঁরা নগদ অর্থের বিনিময়ে রফা করার চেষ্টা চালাতে থাকেন বলে অভিযোগ। এ দিকে কিশোরীর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকায় মঙ্গলবার বিকেলে এক ফাঁকে ভাইঝিকে নিয়ে রাস্তায় এসে বাস ধরে কিশোরীর কাকা বান্দোয়ান থানায় এসে হাজির হন। পুলিশ জানিয়েছে, এই অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম ঘল্টু সিং, অশোক ওরাং, মোটু ওরাং, পুনু ওরাং, নারদ ওরাং, বুধু ওরাং এবং গুরু ওরাং। ধৃতদের গড় বয়স ২১-২২ বছর। মঙ্গলবার রাতেই বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিশোরীর প্রাথমিক ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। রাতে তাকে সেখানে রেখে চিকিৎসা হয়। বুধবার পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে তার চূড়ান্ত পরীক্ষা হয়। পুলিশের একটি সূত্রে খবর, দু’টি পরীক্ষাতেই ওই কিশোরীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy