Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
বিজেপিতে রদবদল

কমিটি থেকে বাদ পাঁচ নেতা

দল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা কমিটির যে পাঁচ জন বাদ পড়েছেন, তাঁদের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরেই জেলা সভাপতির নানা কারণে দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১৮
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের আগে পুরুলিয়ায় বিজেপি-র জেলা কমিটিতে রদবদলে বাদ পড়লেন পাঁচ নেতা। আর তা নিয়েই ফের বিতর্ক তৈরি হয়েছে পুরুলিয়ায়। অভিযোগ উঠেছে, বিভিন্ন কারণে দলের জেলা সভাপতি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বলয়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়াতেই এই কোপ। যদিও নেতৃত্ব তা অস্বীকার করেছেন।

রবিবার দলের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর উপস্থিতিতে জেলা কমিটির রদবদল হয়। বাদ পড়েন দলের ওবিসি মোর্চার জেলা সভাপতি সনাতন মাহাতো, দলের চার জেলা সম্পাদক নগেন্দ্র ওঝা, রাজীব মাহাতো, সুভাষ দাস গোস্বামী ও অম্বুজ তিওয়ারি। তাঁদের মধ্যে প্রথম তিন জনকে ঘিরে আগেই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। নগেন্দ্রবাবু গত বিধানসভায় পুরুলিয়া কেন্দ্র থেকে দলের প্রার্থীও হয়েছিলেন।

দল সূত্রে খবর, সনাতন মাহাতোর বদলে সুভাষ মাহাতোকে ওবিসি মোর্চার জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মানবাজার ১ ব্লকের সত্যবান মাহাতো ও হুড়া ব্লকের ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়কে জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘এই রদবদল সাংগঠনিক প্রক্রিয়ারই অঙ্গ। পুরুলিয়াতে দল অনেক বেড়েছে। ফলে কাজকর্মও বেড়েছে।’’

দল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা কমিটির যে পাঁচ জন বাদ পড়েছেন, তাঁদের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরেই জেলা সভাপতির নানা কারণে দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল। অগস্টের শেষ সপ্তাহে চাষমোড়ে ওবিসি মোর্চার একটি সভা শুরুর আগে নেতাজীর মূর্তি ছাড়াও পাশে থাকা কংগ্রেসের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী ও রাজীব গাঁধী-সহ জেলার প্রয়াত দুই কংগ্রেস নেতার মূর্তিতে মালা দেওয়া হয়। সেই থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। মালা দেওয়ার জন্য সনাতন মাহাতো, নগেন্দ্র ওঝা ও রাজীব মাহাতো শো-কজ করেন জেলা সভাপতি। তাঁরা অনড় থেকে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন, ভারতীয় সংস্কৃতি মেনে তাঁরা প্রয়াত কংগ্রেস নেতাদের সম্মান জানিয়ে মোটেই দলবিরোধী কাজ করেননি। সভাপতির ঘনিষ্ঠেরা তা মোটেই ভাল ভাবে নেননি।

অপসারিত নেতৃত্বের একাংশের ঘনিষ্ঠেরা জানাচ্ছেন, জেলা সভাপতি চান না দলের অন্দরে তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলুক। সে কারণেই সংগঠনের রদবদলের নাম করে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সদ্য অপসারিত ওবিসি মোর্চার জেলা সভাপতি সনাতন মাহাতো দাবি করেন, ‘‘কর্মীদের মধ্যে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছিল। তা হয়তো কারও ভাল না লাগতে পারে। তবে কাজ করতে গেলে পদের দরকার হয় না।’’ রাজীব মাহাতোর অভিযোগ, ‘‘আমাদের এক কর্মী বরাবাজারে তৃণমূলের হাতে বেধড়ক মার খেয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে ছিলেন। কিন্তু জেলা সভাপতি তাঁকে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে বাধা দিয়ে দুর্ব্যবহার করেন। আমরা ওই কর্মীর পাশে দাঁড়াতেই বিরাগভাজন হলাম।’’ নগেন্দ্র ওঝা জানান, কিছু দিন আগেই তাঁকে পুরুলিয়া বিধানসভার দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা সভাপতি দাবি করেন, ‘‘ওঁরা সবাই দলে থাকছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য সাংগঠনিক কিছু রদবদল করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্য কোনও ব্যাপার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Leader Excluded
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE