জোরকদমে: দুর্গাপুর ব্যারাজের জল নিয়ে আসতে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের অডিটোরিয়াম থেকে কানকাটা রিজার্ভার পর্যন্ত পাইপ বসানোর কাজ চলছে। রবিবার চাঁদমারিডাঙায় ছবিটি তুলেছেন অভিজিৎ সিংহ।
বৈশাখের শুরুতেই শুকিয়ে গিয়েছে নদী। জল প্রকল্প থেকে পর্যাপ্ত জল মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে আদ্রায় জলের রেশন ব্যবস্থা শুরু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার থেকে রেলশহরে কর্মীদের আবাসনে এক দিন অন্তর জল সরবরাহ করা হবে। এই বিষয়ে শহরে রেলের তরফে মাইক নিয়ে প্রচার করা হয়েছে। পাশাপাশি, জলের অপচয় বন্ধ করতে আবেদন জানানো হয়েছে। কত দিন পর্যন্ত এ ভাবে রেশন করে জল দেওয়া হবে তা নিয়ে স্পষ্টত কিছু বলা হয়নি রেলের তরফে। তবে বর্ষা আসার আগে পর্যন্ত অবস্থা নাও বদলাতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
রেলশহর আদ্রায় জল সরবরাহ করা হয় মূলত কাশীপুরের দ্বারকেশ্বর নদ থেকে। জল প্রকল্প থেকে জল তুলে আনা হয় সাহেব বাঁধের রিজার্ভারে। সেখান থেকে সরবরাহ করা হয় শহরের কমবেশি সাড়ে তিন হাজার কর্মী আবাসন-সহ স্টেশন, অফিস, হাসপাতালে। এ বারে গরমের শুরুতেই বিপত্তি বেধেছে। রেলের দাবি, দ্বারকেশ্বরের জলস্তর কমে যাওয়ায় পর্যাপ্ত জল পাওয়া যাচ্ছে না। রেলের জল সরবরাহ দফতর সূত্রে জানা গেছে, দ্বারকেশ্বরের জলপ্রকল্প থেকে প্রতিদিন সাড়ে সাত লক্ষ গ্যালন জল পাওয়া যেত। এখন সেখানে দৈনিক এক লক্ষ গ্যালন জল মিলছে। ফলে বাধ্য হয়েই সরবরাহে কাটছাট করতে হয়েছে।
রেলের এক কর্তা জানান, বর্তমানে রেলের আবাসন ও অফিসে জলের ট্যাঙ্ক বসানোর কাজ প্রায় শেষের মুখে। সরবরাহের জল একদিন অন্তর ওই ট্যাঙ্কগুলিতে ভরে দেওয়া হবে। তবে হাসপাতাল ও স্টেশনে দৈনিক জল সরবরাহ হবে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বারকেশ্বর থেকে পর্যাপ্ত পরিমানে জল না মেলায় সম্প্রতি ইন্দো-জার্মান জল প্রকল্প থেকে দৈনিক দুই লক্ষ গ্যালন জল নেওয়া হচ্ছে। জল সরবরাহ দফতরের এক কর্তা জানান, আদ্রায় দৈনিক জলের চাহিদা সাড়ে ন’লক্ষ গ্যালন। এত দিন দ্বারকেশ্বর ও ইন্দো জার্মান প্রকল্প মিলিয়ে সেই চাহিদা মিটে যেত। এখন দ্বারকেশ্বর থেকে এক লক্ষ গ্যালন ও ইন্দো জার্মান প্রকল্প থেকে দু’লক্ষ গ্যালন পাওয়া যাচ্ছে। বাকি ছ’লক্ষ গ্যালন জল নেওয়া হবে সাহেববাঁধ থেকে।
বস্তুত আদ্রার উপকন্ঠে ব্রিটিশ আমলে তৈরি বিশাল আকারের সাহেব বাঁধ থেকেই অতীতে আদ্রায় জল সরবরাহ করা হতো। শহরের এলাকা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গড়ে তোলা হয়েছে অন্য জলপ্রকল্পগুলি।
এই পরিস্থিতিতে রেল শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই চাইছেন, জল সরবরাহে কাটছাট না করে সাহেব বাঁধ থেকে বেশি জল নিয়ে রোজ সরবরাহ করা হোক। কিন্তু রেলের এক কর্তার কথায়, ‘‘সাহেব বাঁধের জল আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য ধরে রাখতে হবে। না হলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বৃষ্টি না হলে আদ্রা জলশূন্য হয়ে যেতে পারে।’’
ফলে আপাতত হিসেব করেই জল খরচ করতে হবে রেল শহরের বাসিন্দাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy