Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কেষ্টর সভায় কেন নেই জটিল, ধন্দ

এখন বিজেপি বিস্তারক কর্মসূচিতে প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি যেতে শুরু করেছে। তা নিয়ে জেলার নানা অংশের মতো ময়ূরেশ্বরেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০২:১০
Share: Save:

নাম না করে দলের এক সময়ের ‘সেনাপতি’ জটিল মণ্ডলের সমালোচনা করলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রবিবার ময়ূরেশ্বরের কোটাসুরে দলীয় সভায় ওই সমালোচনা করেন অনুব্রত।

তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, এ দিনের সভায় আসেননি জটিল-সহ তাঁর পঞ্চায়েত এলাকার কর্মী-সমর্থক, অঞ্চল সভাপতি জগন্নাথ ঘোষ, ঢেকা অঞ্চল সভাপতি সুশান্ত পাল, ব্লক যুব সভাপতি চন্দ্রনীল ঘোষ-সহ বহু কর্মী-সমর্থক। ওই সূত্রটির খবর, তা জেনে রীতিমতো খেপে যান অনুব্রত।

দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরে ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লক সভাপতি নারায়ণপ্রসাদ চন্দ্রের সঙ্গে জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জটিলবাবুর দ্বন্দ্বের চোরাস্রোত বইছে। বিধানসভা ভোটের আগে যা মাথাচাড়া দেয়। ময়ূরেশ্বর কেন্দ্রের টিকিটের অন্যতম দাবিদার ছিলেন জটিলবাবু। কিন্তু শেষমেষ দল টিকিট দেয় অভিজিৎ রায়কে। সেই ক্ষোভে জটিল অনুগামীদের নিয়ে একসময় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোরও চেষ্টা করেছিলেন। ততক্ষণে, অভিজিৎবাবুর হয়ে ভোটের কাজে নেমেছিলেন নারায়ণবাবু। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব নারায়ণবাবুকেই তখন বেশি গুরুত্ব দিতে শুরু করেন। বেগতিক দেখে পরে জটিলবাবুও ভোটের কাজে সামিল হন। কিন্তু, বিরোধটা থেকেই যায়।

এখন বিজেপি বিস্তারক কর্মসূচিতে প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি যেতে শুরু করেছে। তা নিয়ে জেলার নানা অংশের মতো ময়ূরেশ্বরেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, কিছু ক্ষেত্রে বিজেপি তাঁদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছে। সেই মতো মামলা রুজু করতে শুরু করেছে পুলিশও। তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ এক নেতার কথায়, ‘‘দল বলেছিল কোনও সমস্যা হলে দেখবে। কিন্তু, কিছুই তো করছে না। তাই আমরা এ দিনের সভায় যাইনি।’’ জটিলবাবু এ নিয়ে মুখ খোলেননি। তাঁর এক অনুগামী বলেন, ‘‘আমদের মধ্যে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। আসলে এ দিনের সভা সম্পর্কে ব্লক সভাপতি আমাদের কিছু বলেননি। তাই ওই সভায় যাইনি।’’

ব্লক সভাপতি নারায়ণ প্রসাদ চন্দ্র তা মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘সভার কথা সবাইকেই বলা হয়েছিল। তারপরেও ওঁরা কেন এলেন না, বলতে পারব না।’’ একই সঙ্গে তিনি বলছেন, ‘‘বিজেপির বিস্তারকদের রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতে বলা হয়েছিল। ঝমেলায় জড়াতে বলা হয়নি। ঝামেলায় জড়ালে মামলা তো হবেই।’’ এ দিনের সভায় অন্যদের মধ্যে হজির ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা সম্পাদক অভিজিৎ সিংহ, অসিত মাল, ত্রিদীপ ভট্টাচার্য প্রমুখ।

তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, সভায় কিছু নেতাকর্মী গরহাজির থাকতে পারেন সেই খবর শনিবারই দলের জেলা নেতাদের কানে পৌঁছেছিল। সেই মতো সভার থাকার কথা আলাদা ভাবে জানানোও হয়েছিল। তারপরেও ওই নেতাকর্মীদের সভায় দেখতে না পেয়ে মেজাজ হারান অনুব্রত। দলীয় সমাবেশ থেকে অনুব্রত বলেন, ‘‘শুনে রাখুন এখানে দলের ব্লক সভাপতি নারায়ণ প্রসাদ চন্দ্রই শেষ কথা। কোনও দালালের জায়গা নেই।’’ যোগ করেন, ‘‘ব্লক সভাপতিকে বলছি, যাঁরা আসেননি তাঁদের চিঠি ধরিয়ে জানতে চাওয়া হোক তাঁরা দল করবেন কি না?’’ যা শুনে বিক্ষুদ্ধদের হুমকি, ‘‘ধারক না চিঠি। তখন দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE