Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

নজরে না যাওয়া সাড়ে পাঁচশো বুথ

গত মাসেই জেলায় ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভা করতে এসে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দলের নেতা কর্মীদের একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৭ ০৮:১০
Share: Save:

এক দিকে যুব মোর্চার উদ্যোগে ফুটবল প্রতিযোগিতা বা মশাল দৌড়ের মতো জনসংযোগমূলক কর্মসূচি। অন্য দিকে বিস্তারক যোজনায় বাকি থাকা বুথগুলিতে এক মাসের মধ্যে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলায় সংগঠন আরও শক্তিশালী করতে এই পথেই হাঁটতে চাইছে বিজেপি। রবিবার পুরুলিয়া শহরের একটি ধর্মশালায় বিজেপির জেলা কার্যকারিণী বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

দল সূত্রের খবর, বৈঠকে মূলত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েই আলোচনা হয়েছে। স্থির হয়েছে, যুব মোর্চা বিভিন্ন এলাকায় ফুটবল প্রতিযোগিতার মত জনপ্রিয় জনসংযোগমূলক কর্মসূচি নেবে। বিস্তারক যোজনায় জেলার ২২৫৩টি বুথের মধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচশো বুথে এখনও পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এক মাসের মধ্যে ওই বুথগুলিতে গিয়ে দলীয় কর্মসূচি নেবেন কর্মীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কার্যকারিণী সভাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলায় দলের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা ও জনসংযোগমূলক কর্মসূচি নেওয়ার বিশয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে।” এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সংগঠক (সহ) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, দলের আইনজীবী সেলের নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায়, পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক রাজেশ যাদব, জাতীয় পরিষদের সদস্য বিপি সিংহদেও, প্রদেশ কমিটির সদস্য বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত মাসেই জেলায় ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভা করতে এসে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দলের নেতা কর্মীদের একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিচু তলায় প্রস্তুতি শুরু করেছ তৃণমূল। এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে মাঠে নামছে গেরুয়া শিবির। এ দিনের সভাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজ করার জন্য জেলার ন’টি বিধানসভার মধ্যে ছ’টিতে বিস্তারক (সর্বক্ষণের দলীয় কর্মী) নিযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য জেলায় সাত সদস্যের কমিটি তৈরি করে দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। বিদ্যাসাগরবাবু জানান, পরবর্তী পর্যায়ে জেলার প্রতিটি মণ্ডল ও বুথ স্তরে ওই কমিটি তৈরি করা হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে লক্ষ রেখেই প্রতি বুথ এলাকার সমস্যা ও অন্য বিষয় নিয়ে ছ’টি কর্মসূচি নেওয়ার বিষয়ে এ দিনের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে ঘটনা হল, বিস্তারক যোজনায় জেলার প্রতিটি বুথে যাওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল বিজেপি শেষ পর্যন্ত তা পূরণ হয়নি। এ দিনের বৈঠকে সেই বিষয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। বিস্তারক যোজনায় প্রতি বুথে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে দলের কসর্মসূচির প্রচার, কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন মূলক কাজকর্ম, রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা, শাসকদলের দুর্নীতি ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য নেতৃত্ব। দলেরই একাংশ দাবি করেছেন, খাতায় কলমে যত বুথ দেখানো হচ্ছে তত বুথে দলের কর্মীরা আদৌও গিয়ে উঠতে পারেননি বলে তাঁদের দাবি। তাঁদের অভিযোগ, এই কর্মসূচিতে পুরুলিয়াতে সাংগঠনিক লাভ বিশেষ কিছু হয়নি।

তবে অভিযোগ উড়িয়ে জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘যাঁরা আমাদের দলের লোক নন তারাই এ সব বলছেন। আমাদের কর্মীরা সাড়ে পাঁচশো বুথ বাদ দিয়ে সমস্ত বুথে গিয়েছিলেন। তার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।” ওই সাড়ে পাঁচশো বুথে ‘তৃণমূলের সন্ত্রাস’-সহ বিভিন্ন কারণে যাওয়া আপাতত সম্ভব হয়নি বলে দাবি বিদ্যাসাগরবাবুর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE