শিবের নানা রূপ তুলে ধরছে দুবরাজপুরের পুজো কমিটি।—নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুজোর পরে দুবরাজপুর শহরে থিম ভাবনার ছোঁয়া এ বার কালীপুজোতেও।
শহরের একটি বড়মাপের পুজো উদ্যোক্তারা অন্তত সেই পথেই হাঁটছেন। কৈলাসে শিব ও তাঁর নানা রূপ ফুটে উঠবে মণ্ডপজুড়ে। বরাত দেওয়া হয়েছে একজন আর্ট কলেজ থেকে পাস করা শিল্পীকে। যিনি দুর্গাপুজোয়ও শহরের একটি মণ্ডপ রূপায়ণের দায়িত্বে ছিলেন। শহরের অন্যতম বড় উদ্যোক্তাদের এমন ভাবনায় উদ্বুদ্ধ অন্য ক্লাবগুলিও। কর্মকর্তারা বলছেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পরের বার থেকেই ভিন্ন পথে প্রথার বাইরে যাওয়ার কথা ভেবেছেন তাঁরা।
শহরবাসী ও ক্লাব উদ্যোক্তরা বলছেন, বছরের পর বছর যে প্রথা চালু তা হল দুর্গাপুজোর সময়ই এলাকার বাইরে একটি বড় কোনও দুর্গা মণ্ডপকে পছন্দ করা হয়। তারপরই সেই ডেকোরেটর্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই মণ্ডপটিকেই তুলে নিয়ে এসে কালীপুজো করা। মণ্ডপটি ঠিক কেমন হবে তা তো আগেই জানা। ব্যাতিক্রম একটাই শুধু দুর্গাপুজোর মণ্ডপের মূল প্রবেশ পথটিকে কালী পুজোয় একটু ছোট করে দেওয়া, ব্যস।
থিম কেন, সে প্রশ্নে জনকল্যাণ সঙ্ঘের সম্পাদক রঞ্জন মিশ্র বলছেন, ‘‘আসলে ভাবনাটা এসেছিল গতবার থেকেই। গতবার একটি দুর্গাপুজোর মণ্ডপ এনে কালী করা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সেই মণ্ডপটিই একটু ভিন্ন স্বাদের ছিল। যা দর্শকদের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছিল। ভিড় ও হয়েছিল অনেক বেশি। তাই এ বারও আমরা একটু নতুন স্বাদ দিতে চাইছি।’’
ঘটনা হল, এ শহরে দুর্গাপুজো থেকে কালী পুজো কিছুটা এগিয়ে। বেশ কয়েকটি বড় কালী পুজো তো আছেই। রয়েছে পাহাড়েশ্বর শ্মশানকালী, দুবরাজপুর ব্লক অফিসের সামনে মশানকালী-সহ একাধিক শতাব্দী প্রাচীন কালী মন্দির। এ ছাড়া কয়েকশো ছোটবড় কালী পুজো হয়। শহরে প্রচুর অবাঙালি পরিবার বাস করেন। তাই দিওয়ালিও ভীষণ জমজমাট। পুজোর জাঁক নিয়ে বলছিলেন বিভিন্ন পুজো কমিটির কর্তারা।
৪৬ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে কালী পুজোর আয়োজক মাদৃক সঙ্ঘ। বাজেট সাড়ে চার লক্ষ। ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ সুনীলকুমার কবিরাজ বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরেই পেল্লাই মণ্ডপ হচ্ছে। এ বারও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু পরের এসব না করে অন্যস্বাদের মণ্ডপ তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলতে হবে।’’ প্রায় একই সুর ডাকবাংলো পাড়ায় অগ্রদূত ক্লাবের কর্মকর্তাদের গলাতেও। মানিক মুখোপাধ্যায় ও মুজিব দত্তরা বলছেন, ‘‘এ বারই আমরা প্রথার বাইরে ভেবেছিলাম। কিন্তু দেরি হওয়ায় সেটা বাস্তবায়িত হল না। পরের বার নিশ্চিত দুর্গাপুজোর মণ্ডপ দিয়ে আর কালী পুজো নয়।’’ সৌম্যপ্রিয় পাল নামে যে শিল্পীর হাত ধরে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে তিনি বলছেন, ‘‘এমন কাজের সংখ্যা আরও বাড়লে লাভ যেমন শিল্পীদের, তেমনই পুজো দেখতে আসা দর্শকেরাও উৎসবের মোড়কে শিল্পের মজা পাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy