Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাঁকুড়ায় মৃত জেলার যুবক

আইসক্রিম তৈরির কম্প্রেসার ফেটে মৃত্যু হল এক জনের। জখম আরও দু’জন। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বড়জোড়ার হাটআশুড়িয়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সেখ আজমল হোসেনের (৪২) বাড়ি বীরভূমের ইলমবাজার থানার জয়পুরে। জখম হয়েছেন আজমলের ভাই আজিজুল শেখ ও মামা শেখ মনিরুল। তাঁরাও ইলামবাজারের জয়পুরেরই বাসিন্দা।

শেষ: আজমল। নিজস্ব চিত্র

শেষ: আজমল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বড়জোড়া শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৮
Share: Save:

আইসক্রিম তৈরির কম্প্রেসার ফেটে মৃত্যু হল এক জনের। জখম আরও দু’জন। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বড়জোড়ার হাটআশুড়িয়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সেখ আজমল হোসেনের (৪২) বাড়ি বীরভূমের ইলমবাজার থানার জয়পুরে। জখম হয়েছেন আজমলের ভাই আজিজুল শেখ ও মামা শেখ মনিরুল। তাঁরাও ইলামবাজারের জয়পুরেরই বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, আজমল বেশ কয়েক বছর আগে হাটআশুড়িয়ার একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে আসেন। পরে বিয়ে করে পাকাপাকি ভাবে হাটআশুড়িয়াতেই বসবাস করতে শুরু করেন। বাড়ির পাশে একটি টালির বাড়িতে আইসক্রিম বানানোর ব্যবসা শুরু করেন। সেই ব্যবসায় তাঁর ভাই আজিজুলও যুক্ত ছিলেন।

সম্প্রতি কম্প্রেসারে কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় জয়পুর থেকে মামা মনিরুলকে ডেকে আনেন আজমল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময়ে কম্প্রেসারটি খুব গরম হয়ে গিয়েছিল। আজমল জল ঢেলে সেটি ঠান্ডা করতে যান। প্রচণ্ড শব্দে যন্ত্রটি ফেটে আজমলের মাথার খুলি উড়ে যায়। ঘরের এক কোণে ছিলেন মনিরুল ও আজিজুল। জখম হন তাঁরাও। যন্ত্রের একটি অংশ বাড়ির অ্যাসবেসটসের ছাউনি ভেদ করে কয়েকশো মিটার দূরে গিয়ে পড়ে। গোটা গ্রাম প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে।

ঘটনার খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ উপস্থিত হয়। জখমদের উদ্ধার করে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। আজমলের এক আত্মীয় আরোজ মণ্ডল বলেন, “ঘটনার সময় আমি গ্রামেই ছিলাম। আওয়াজ শুনে শিউরে উঠেছিলাম। বিষ্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে গ্রাম ছাড়িয়ে আশপাশের অন্য গ্রামের লোকজনও শব্দ শুনেছেন।’’ আজমলের দু’টি শিশুকন্যা রয়েছে। শোকে ভেঙে পড়েছেন আজমলের স্ত্রী সুরাইয়া শেখ। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে দুটোকে এখন কী ভাবে মানুষ করব বুঝে উঠতে পারছি না।’’

বাঁকুড়া জেলার অনেকেই বাড়িতে আইসক্রিম বানিয়ে ব্যবসা করেন। সেগুলি কারখানার মান্যতা না পাওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসনের নজরের বাইরেই রয়ে যায়। ওই সমস্ত ব্যবসায় নজরদারি চালানোর কথা জেলা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের।

তবে বড়জোড়ায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ আইসক্রিম বানান বলে জেলা শিল্প দফতরের জানা নেই বলে দাবি করেছেন দফতরের আধিকারিক মৌ সেন। তিনি বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে নেই। আইসক্রিম বানানোর জন্য প্রয়জনীয় ছাড়পত্র ওই ব্যক্তি নিয়েছিলেন কি না খতিয়ে দেখা হবে।” জেলা শিল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কম্প্রেসার নিতে হলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্রও লাগে। নির্দিষ্ট সময়ে ব্যবধানে ছাড়পত্র নবীকরণ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়েছিল কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ice-making compressors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE