স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নেই। ফার্মাসিস্টের ভরসায় চলছে হাসপাতাল। সেই ফার্মাসিস্টও সপ্তাহে তিন দিন আসেন। এমনই অবস্থা মুরারই ২ ব্লকের ভীমপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এলাকায়। স্থানীয় আমডোল পঞ্চায়েতের ১৬টি গ্রাম-সহ লাগোয়া মুর্শিদাবাদের চারটি, সব মিলিয়ে ২০টি গ্রামের প্রায় তিরিশ হাজার বাসিন্দার ভরসা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
কবে প্রশাসন কী করবে, তার অপেক্ষা না করেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। গড়ে উঠেছে স্বাস্থ্যরক্ষা কমিটি। সেই কমিটির সদস্যরা হাসপাতাল বাঁচাতে কী কী করণীয়, তা ঠিক করতে গ্রামে গ্রামে
ঘুরছেন। সেই মতামত নিয়ে তাঁরা সম্প্রতি স্বাস্থ্যকর্তাদের দ্বারস্থ হন। কমিটির আহ্বায়ক কামালউদ্দিন আহমেদ, সদস্য সেলিম আখতার, মনোজ মণ্ডলরা জানালেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি প্রায় চল্লিশ বছরের পুরনো। সরকারি খাতায় এই কেন্দ্র ১০টি শয্যার। আগে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসব-সহ নানা ছোটখাটো অপারেশন হত। এমন স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই বছর চারেক হল কোনও চিকিৎসক নেই। রয়েছেন কেবল এক জন ফার্মাসিস্ট ও এক জন এএনএম (অগ্জিলরি নার্স মিডওয়াইফ) আছেন। তাঁদের ভরসাতেই হাসপাতাল চলছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ,
ফার্মাসিস্টও সপ্তাহে তিন দিন হাসপাতালে আসেন।
কাছাকাছি স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায় এলাকার কুড়িটি গ্রামের লোকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যেও ২০ কিলোমিটার দূরে মুরারই ১ ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল কিংবা ১৬ কিলোমিটার দূরে পাইকরে অবস্থিত মুরারই ২ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হচ্ছে। এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, মুরারই থানার মধ্যে এই এলাকাটি বন্যাপ্রবণ। এ বার বর্ষার মরসুমেও যে এমনটা হবে না তার নিশ্চয়তা নেই। আর বন্যা পরিস্থিতি মানেই পেটের রোগ, সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা বাড়া। দূরের হাসপাতালে যেতে গেলে সময়ে চিকিৎসার শুরুর অভাবে প্রাণ সংশয়ের সম্ভবনাও থাকছে।
স্বাস্থ্যরক্ষা কমিটির আরও দাবি, হাসপাতালের বর্তমান ভবনটিরও সংস্কার করা হোক।
ভীমপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক-সঙ্কট থেকে সপ্তাহে তিন দিন ফার্মাসিস্ট আসা— এ সব তথ্যই জানেন রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ব্রজেশ্বর মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘পাইকরে অবস্থিত ব্লক হাসপাতালে প্রতি মাসে ৪০০ জনের প্রসব হয়। সেখানে বিএমওএইচকে নিয়ে পাঁচ জন চিকিৎসক। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যদি চিকিৎসকের অভাব থাকে, তা হলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক দেব কী করে?’’ একই সঙ্গে বলছেন, ‘‘ওনাদের সমস্যার কথা বুঝি। তাই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।’’ ফার্মাসিস্টের তিন জনের আসার বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy