Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
উপহার রাজ্য সরকারের

রাস্তা পেল বিশ্বভারতী

নিত্য পথের ধুলো আর ধোঁয়ায় মুখ ঢাকছে রামকিঙ্করের কলের বাঁশি, ধান ঝাড়াইয়ের মতো ভাস্কর্য-শিল্প কর্ম। শব্দে বিপন্ন হচ্ছে আশ্রমের পরিবেশ। বেপরোয়া যান চলাচলের কারণে পথে প্রাণ হাতে পারাপারা করতে হয় পড়ুয়াদের।

হস্তান্তর: সোমবার। নিজস্ব চিত্র

হস্তান্তর: সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ০০:৫২
Share: Save:

নিত্য পথের ধুলো আর ধোঁয়ায় মুখ ঢাকছে রামকিঙ্করের কলের বাঁশি, ধান ঝাড়াইয়ের মতো ভাস্কর্য-শিল্প কর্ম। শব্দে বিপন্ন হচ্ছে আশ্রমের পরিবেশ। বেপরোয়া যান চলাচলের কারণে পথে প্রাণ হাতে পারাপারা করতে হয় পড়ুয়াদের। পথের ধারে গড়ে উঠছে বেঢপ নির্মাণ, দোকান-বাজার।

এ সব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শান্তিনিকেতনের ডাকঘর মোড় থেকে কালিসায়র মোড় পর্যন্ত পূর্ত দফতরের রাস্তাটি চেয়েছিল বিশ্বভারতী। সোমবার হল সেই হস্তান্তর। বিশ্বভারতীর যুগ্ম- কর্মসচিব (সম্পত্তি) অশোক মাহাতোর হাতে নথি দিলেন পিডব্লিউডি-র মহকুমার নির্মাণ বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল মল্লিক।

এ দিন বিকালে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে, শান্তিনিকেতনের উপাসনা মন্দিরের সামনে হয় ওই রাস্তা হাত বদলের অনুষ্ঠান। আশ্রমের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই রাস্তায় নানা উদ্যোগ নিতে আর বাধা রইল না বিশ্বভারতীর। উল্লেখ্য, এতদিন বিশ্বভারতীর আশ্রমিক পরিবেশ ঠিক রাখার পাশাপাশি পঠনপাঠনের পরিবেশ যাতে বিঘ্নিত না হয় তার জন্য একাধিক সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকী প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা বিশ্বভারতীর পরিদর্শক এপিজে আবদুল কালাম থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদক চুরির পরে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ কমিটিও তাঁদের সুপারিশের মধ্যে জানিয়েছিলেন ওই রাস্তাকে বিশ্বভারতীর দখলে রাখতে হবে। কেবল নিরাপত্তা নয়, প্রশ্ন জড়িয়ে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নিয়েও।

বিশ্বভারতী সূত্রের খবর ২০১২ সালের মে মাসে রাজ্যের মুখ্য সচিবের সঙ্গে একটি বৈঠক করে বিশ্বভারতী। সেই বৈঠকে রাস্তার প্রসঙ্গটি ওঠে। বিশ্বভারতীর হাতে ওই রাস্তা তুলে দেওয়ার জন্য ওই মাসেই রাজ্য সরকারের কাছে লিখিত আর্জি জানান বিশ্বভারতীর সম্পত্তি আধিকারিক অশোকবাবু। পরে একাধিক বার চিঠি যেমন গিয়েছে, তেমন বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু সেই অর্থে কাজ আর এগোয়নি। ২০১৬ সালের অগস্টে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্তের আমন্ত্রণে শান্তিনিকেতনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি তিনিও জানতে পারেন।

এরপরেই কার্যত তড়িঘড়ি শুরু হয় প্রস্তাব খতিয়ে দেখার কাজ। ২০১৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জেলাশাসক রাস্তাটি বিশ্বভারতীর হাতে তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেন। মনিরুল মল্লিক বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে, ডাকঘর মোড় থেকে কালিসায়র মোড় পর্যন্ত পিডব্ল্যুডির প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার হল। এ দিন তারই নথি তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছি।”

অশোক মাহাতো ছাড়াও অনুষ্ঠানে ছিলেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়, কর্মীসভার সভাপতি গগন সরকার, অধ্যাপক সভার সম্পাদক গৌতম সাহা প্রমুখ। অশোকবাবু বলেন, “ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের নির্দেশে ওই রাস্তা নিয়ে একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। রাস্তার পাশে হবে সাইকেল ট্র্যাক।” ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত বলেন, “রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ। ওই রাস্তায় যাতে যানজট না হয়, দখল না হয় তা দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Visva-Bharati Road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE