সাহায্যের হাত। —নিজস্ব চিত্র।
তাদের দিকে সটান প্রশ্ন— ‘কোন বিষয়টা সব চেয়ে কঠিন লাগে?’। একটু ভেবে ছাত্রদের জবাবও এল— ‘ইতিহাস’। পাল্টা প্রশ্ন করলেন ওই উর্দিধারী, ‘কেন ইতিহাস? অঙ্ক কঠিন লাগে না?’ এ বার উত্তর— ‘না। আসলে ইতিহাসের সাল-তারিখ মনে রাখা খুব কঠিন। বড্ড মুখস্থ করতে হয়’। এর পরে প্রশ্নকর্তা হাতের আঙুলের মাধ্যমে কীভাবে ইতিহাসের জটিল সাল-তারিখ সহজেই মনে রাখা যায়, তার উপায় বাতলালেন।
বুধবার সকালে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার আগে এ ভাবেই শিক্ষকের ভূমিকায় দেখা গেল জেলার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমারকে। যিনি দূর থেকে আর্শীবাদ না করে সটান হাজির হয়েছিলেন সিউড়ির অরবিন্দ ইনস্টিটিউট ফর সাইট লেস-এর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নবিরুল, সোমনাথ, বিবেক, সীতারামদের কাছে, ভরসা দিতে।
এ দিন এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশের তরফ থেকে ওই চার পরীক্ষার্থীর হাতে স্কুলব্যাগ, টিফিন বক্স, পেন, জলের বোতল আর লেখার জন্য ক্লিপর্বোড তুলে দেওয়া হয়। সঙ্গে ফুলের তোড়াও। আবাসিক ছেলেরা কী ধরনের খেলায় উৎসাহী তার খোঁজ খবর নেন পুলিশ সুপার। প্রয়োজনে পুলিশ লাইনের মাঠে খেলার ব্যবস্থা করার অনুমতিও দেন। অনুষ্ঠানে হাজির জনশিক্ষা প্রসারের আধিকারিক মহম্মদ হাসিমুদ্দিন বলেন, ‘‘বীরভূম পুলিশের এই ভূমিকা খুবই প্রশংসা যোগ্য। একটু সহানুভুতি পেলে এই ছেলেরা পড়াশোনা আর খেলায় সহজেই সফল হবে। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।” পুলিশকে কতৃজ্ঞতা জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল সিংহও।
সব শেষে পুলিশ কর্তারা আবাসিকদের থাকার জায়গা ঘুরে দেখতে যান। তত ক্ষণে ঘড়ির কাঁটা ১১টা ছেড়ে একটু এগিয়েছে। আর জেলা পুলিশের ব্যবস্থাপনায় অটোতে চেপে পড়েছে নবিরুলরা। তাদের সঙ্গে থে হস্টেল সুপার সৌমেন্দু সেনগুপ্ত। জেলা ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতায় একবুক সাহস নিয়ে নবিরুলরা ওই হলুদ-কালো অটোয় চড়ে ছুটে চলল জীবনের বড় পরীক্ষা দিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy