জল পরিশোধন কেন্দ্রের উদ্বোধন।—নিজস্ব চিত্র।
গরমের সময়ে জলের জন্য হাহাকার শুরু হয় পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায়। এ বারে অল্প কিছু টাকায় সেখানে পাওয়া যাবে পরিস্রুত পানীয় জল। আর তার লাভের কড়ি কোনও বহুজাতিক সংস্থা নয়, যাবে স্থানীয় স্বনির্ভর দলের মহিলাদের হাতেই। বুধবার পুরুলিয়ায় এই পাইলট প্রোজেক্টের উদ্বোধন করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব ছোটেন ডি লামা।
এ দিন পুরুলিয়া জেলা স্বনিযুক্তি প্রকল্প দফতরের নীচে একটি জল পরিশোধন যন্ত্রের উদ্বোধন করে সচিব বলেন, ‘‘এটি রাজ্যের পাইলট প্রকল্প। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরাই পুরো বিষয়টি পরিচালনা করবেন। সাফল্য মিললে বাকি রাজ্যেও এই প্রকল্প চালু করা হবে।’’ দফতরের নীচের ওই প্রকল্পটির দায়িত্ব পেয়েছে পুরুলিয়া ১ ব্লকের চাকলতোড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একটি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী। গোষ্ঠীর সম্পাদক রীতা মাহাতো বলেন, ‘‘এই যন্ত্রে ঘণ্টায় এক হাজার লিটার পরিস্রুত জল পাওয়া যাবে। আমরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছি।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে যন্ত্র কিনে জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সরবরাহ করা হচ্ছে। ভূগর্ভ থেকে জল তুলে পরিস্রুত করা হবে সেখানে। জেলা স্বনির্ভর ও স্বনিযুক্তি প্রকল্প দফতরের আধিকারিক অমল আচার্য জানান, প্রথম পর্যায়ে ৭টি যন্ত্র এসেছে। যন্ত্রগুলির দাম প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি এক লক্ষ করে টাকা দিয়েছে। বাকি টাকা সহজ ঋণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে দেওয়ার জন্য কথাবার্তা চলছে।
বহুজাতিক সংস্থার বোতলবন্দি জল বিক্রি হয় চড়া দামে। অমলবাবু জানান, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই পরিস্রুত জল তার তুলনায় প্রায় জলের দরেই বিক্রি করবে। ২০ লিটার জলের দাম থাকবে ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। তার পরেও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি লাভ করতে পারবে বলে তিনি জানান।
কিন্তু অল্প দামে পাওয়া জলের মান কেমন হতে পারে?
এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে যন্ত্রে পরিশোধন করা জল গ্লাসে করে তুলে দেওয়া হয় সচিব ও জেলাশাসকের হাতে। পুরুলিয়া জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘এই জল বাজার চলতি বোতলের জলের তুলনায় ভাল বৈ মন্দ নয়।’’ সাধারণ মানুষ এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবে বলে তাঁর দাবি।
ঋণ মেলা। জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে আর্থিক সহায়তা দিতে ঋণ মেলা হল পুরুলিয়া রবীন্দ্র ভবনে। বুধবার জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব ছোটেন ডি লামা জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের হাতে ঋণ তুলে দেন। তিনি জানান, এ দিন ১৫৪৫টি দলকে মোট ২৩ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এখনও জেলার বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ৪৮০০টি ঋণের আবেদন জমা পড়ে রয়েছে। আমরা বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে ওই ঋণের ব্যবস্থা করছি।’’ ১৫ মার্চের মধ্যে ঋণ দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে বলা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy