Advertisement
১১ মে ২০২৪
জয়দেবে বাস উল্টে মৃত পাঁচ পর্যটক

ফেরা হল না, শোকস্তব্ধ পাড়া

সপ্তাহান্তে বাস ভাড়া করে বেড়াতে গিয়েছিলেন পাশাপাশি দু’টি পাড়ার অনেকে। কিন্তু এমন অভিজ্ঞতা হবে, দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি তাঁরা।দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড় লাগোয়া ভবানীপল্লি ও ভগৎ সিংহ কলোনির ৬০ জন বাসিন্দা শুক্রবার মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি ও বীরভূমের তারাপীঠ বেড়াতে গিয়েছিলেন। রবিবার সকালে বাড়ি পৌঁছনোর কথা ছিল।

জয়কে ঘিরে পরিজনেরা।

জয়কে ঘিরে পরিজনেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:০৭
Share: Save:

সপ্তাহান্তে বাস ভাড়া করে বেড়াতে গিয়েছিলেন পাশাপাশি দু’টি পাড়ার অনেকে। কিন্তু এমন অভিজ্ঞতা হবে, দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি তাঁরা।

দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড় লাগোয়া ভবানীপল্লি ও ভগৎ সিংহ কলোনির ৬০ জন বাসিন্দা শুক্রবার মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি ও বীরভূমের তারাপীঠ বেড়াতে গিয়েছিলেন। রবিবার সকালে বাড়ি পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু ফেরার পথে বীরভূমের জয়দেবের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় বাসটি। মৃত্যু হল এক পরিবারের তিন জন-সহ মোট পাঁচ জনের। অল্পবিস্তর আহত হন বাসের সব যাত্রীই।

ভবানীপল্লির কার্তিক মিশ্র (৪৫) ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন। কার্তিকবাবু ডিভিসি মোড়ের কালী মন্দিরের পুরোহিত। মেয়ে পুজা (১৭) এবিএল হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ত। ছেলে জয় ওই স্কুলেই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। দুর্ঘটনায় কার্তিকবাবু, তাঁর স্ত্রী শান্তাদেবী (৩৮ ) ও পুজার মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার পরে এ দিন দুপুরে জয়কে বাড়ি নিয়ে এসেছেন প্রতিবেশীরা। ঘটনার পর থেকে শুধু কেঁদে চলেছে সে। আগলে রেখেছেন পড়শিরা।

ভবানীপল্লিতেই বাড়ি একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল মাহাতোর (১৭)। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তারও। তার বন্ধু সতীশকুমার সিংহ বলে, ‘‘আমরা পাশাপাশি বসে গান শুনছিলাম। হঠাৎ বিকট আওয়াজ করে গাড়িটা পাল্টি খায়। আমি জ্ঞান হারাই। জ্ঞান ফিরতে দেখি রাহুল রক্তাক্ত অবস্থায় পাশে প়়ড়ে রয়েছে। লোকজন আমাদের উদ্ধার করছেন।’’ স্বামী মনোরঞ্জন ঘোষের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন ভগৎ সিংহ কলোনির বাসিন্দা ভারতী ঘোষ (৪৭)। বাড়ি ফেরা হল না তাঁরও।

দুর্ঘটনায় আহত প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়, গঙ্গা চট্টোপাধ্যায়েরা ভর্তি হয়েছেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। অনেকে ইলামবাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বোলপুর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘বাস উল্টে গেলে পুলিশকে ফোন করি। ঘণ্টাখানেক পরে পুলিশ আসে। এলাকার লোকজনই আমাদের উদ্ধার করেন।’’

পাঁচ জনের এমন মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে গোটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রুইদাস, প্রতিমা রুইদাসেরা বলেন, ‘‘এমন ঘটে গিয়েছে, বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে!’’ এ দিন সকালে খবর পেয়েই বোলপুর হাসপাতালে যান দুর্গাপুরের ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা পবিত্র চট্টোপাধ্যায়। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা মৃতদের পরিবারের পাশে আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE