বাঁকুড়ার হোটেলে পুরুলিয়ার যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে নেমে তাঁর স্ত্রীকেই গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় রঘুনাথপুর থানা এলাকার চাঁদড়া গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতের নাম কাবেরী রায় চট্টোপাধ্যায়।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাঁকুড়া শহরে একটি হোটেলের ঘর থেকে ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায় নামে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষক্রিয়া তাঁর মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হয়। হোটেলের ঘরে পুলিশ একটি সুইসাইড নোটও পেয়েছিল। ঘটনার পরে মৃতের এক দিদি মৌসুমী সাহানা ইন্দ্রজিতের স্ত্রী কাবেরীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে ওই দম্পতির মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে সমস্যা চলছিল। তাঁদের বছর তেরোর একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে। ইন্দ্রজিৎ একটি বেসরকারি সংস্থায় সেলসম্যানের কাজ করতেন। কাবেরী পুরুলিয়া শহরের একটি সোনার দোকানের কর্মী। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিতুড়িয়ার ইন্দ্রজিতের সঙ্গে রঘুনাথপুর শহরের ব্লকডাঙা এলাকার বাসিন্দা কাবেরীর কলেজে পড়ার সময় থেকেই সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০৪ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। কাবেরীর বাড়ির লোকজন বিয়ের ব্যাপারটি মেনে নেয়নি। ওই দম্পতি বর্ধমানের কুলটিতে বসবাস শুরু করেন। বাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পরে, ২০০৬ সালে দু’জনে রঘুনাথপুরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন। সেই সময় থেকেই নানা কারণে তাঁদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। ২০০৭ সালে পুরুলিয়া শহরের নাপিতপা়ড়া এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে বসবাস শুরু করেন তাঁরা।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত বছর পুজোর আগে কাবেরীর সঙ্গে অন্য কোনও যুবকের সম্পর্ক গড়ে ওঠার সন্দেহ থেকে দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে। সেই সময়ে কাবেরী বিবাহ বিচ্ছেদ দাবি করেন। খোরপোশের বদলে ইন্দ্রজিতের কাছে তিনি এককালীন এক লক্ষ টাকাও দাবি করেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা বাড়তে থাকে। ইন্দ্রজিতের পারিবারের লোকজনের দাবি, বিবাহ বিচ্ছেদের প্রস্তাবে তাঁর মত ছিল না। এই নিয়ে মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন ওই যুবক। হোটেল থেকে দেহ উদ্ধারের ঘটনার কয়েক দিন আগে তিনি বাঁকুড়া যান।
পুলিশের দাবি, কাবেরীর মোবাইল ফোন থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সোমবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে বিচারক দু’দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy