Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

অফিসারদের মাঠে নেমে কাজের নির্দেশ

সরকারি ভর্তুকির ‘লোভ’ না দেখিয়ে গ্রামবাসীকে প্রকৃত সচেতন করে ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযানে’র প্রচার করার পরামর্শ দিলেন পঞ্চায়েত দফতরের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার। শুক্রবার বাঁকুড়া ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতিতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে তিনি একটি বৈঠক করেন। পরে তিনি বলেন, “গ্রামবাসীদের ঠিক ভাবে সচেতন না করলে বাড়িতে শৌচালয় গড়েও লাভ নেই। তাই বাইরে মলত্যাগ করার অভ্যেস ছাড়াতে প্রকল্পের আধিকারিকদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে এর ক্ষতিকারক রূপ দেখাতে হবে।”

স্বাস্থ্যবিধান মেলা শুরু হল রাইপুরে। শুক্রবারের নিজস্ব চিত্র।

স্বাস্থ্যবিধান মেলা শুরু হল রাইপুরে। শুক্রবারের নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৪২
Share: Save:

সরকারি ভর্তুকির ‘লোভ’ না দেখিয়ে গ্রামবাসীকে প্রকৃত সচেতন করে ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযানে’র প্রচার করার পরামর্শ দিলেন পঞ্চায়েত দফতরের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার। শুক্রবার বাঁকুড়া ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতিতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে তিনি একটি বৈঠক করেন। পরে তিনি বলেন, “গ্রামবাসীদের ঠিক ভাবে সচেতন না করলে বাড়িতে শৌচালয় গড়েও লাভ নেই। তাই বাইরে মলত্যাগ করার অভ্যেস ছাড়াতে প্রকল্পের আধিকারিকদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে এর ক্ষতিকারক রূপ দেখাতে হবে।”

কী ভাবে?

বৃহস্পতিবারই বাঁকুড়া ১ ব্লকের কেঞ্জাকুড়ার কাছে হরেকৃষ্ণপুর গ্রামে গিয়েছিলেন দিব্যেন্দুবাবু। গ্রামের একটি মাঠে গ্রামবাসীদের ডাকা হয়। ওই মাঠেই চুন, আবির ও চকের গুড়ো দিয়ে গ্রামের রূপরেখা আঁকা হয়। গ্রামের যেখানে যেখানে মলত্যাগ করা হয়, সেখানে হলুদ গুড়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এ বার কী ভাবে সেই মল মাছির পায়ে লেগে খাবারে বসছে, জলের মাধ্যমে পুকুরে গিয়ে মিশছে, গরু ছাগলের পায়ে লেগে গ্রামের রাস্তায় আসছে এই সবই দেখানো হয়। যা দেখে গ্রামবাসীরা বাইরে মলত্যাগ করলে আখেরে নিজেদেরই স্বাস্থ্যের ক্ষতি বলে উপলব্ধি করেছেন। হাতেকলমে এই বিপদ সাক্ষাত করে আগামী ১৯ নভেম্বর ‘বিশ্ব শৌচালয় দিবসে’র মধ্যেই ওই গ্রামবাসীরা বাড়িতে শৌচালয় বানাবেন ও তার সুব্যবহার করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন বলে জানিয়েছেন দিব্যেন্দুবাবু। আধিকারিকদের এই পদ্ধতিতেই গ্রামবাসীদের বোঝানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

এ দিন বৈঠকের শেষে দিব্যেন্দুবাবু জানান, মানুষের ত্যাগ করা মলের মধ্যে ১০ গ্রাম মল আমাদের পেটে যায়। তাতে ১০ কোটি জীবাণু থাকে। যার মধ্যে বেশ কিছু জীবাণু প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আমাদের শরীরে নেই। তিনি বলেন, “গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সব গ্রামে শৌচালয়ের ব্যবহার কম হয়, সেখানে অপুষ্টি, উচ্চতা না বাড়া, শিশুমৃত্যুর ঘটনা বেশি পরিমাণে ঘটছে। রাজ্যে এখনও প্রায় ৬০ লক্ষ পরিবার বাইরে শৌচকর্ম করে। ২০১৭ সালের মধ্যে রাজ্যের সব ক’টি বাড়িতে শৌচালয় গড়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য।” একই লক্ষ্যমাত্রার মেয়াদ আরও দু’বছর বাড়িয়েছে কেন্দ্র সরকারও। ২০১৯ সালের মধ্যে ‘স্বচ্ছ ভারত’ গড়তে চান প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যে প্রতি বছর ১৫ লক্ষ বাড়িতে শৌচালয় গড়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। দিব্যেন্দুবাবুর বক্তব্য, “রাজ্যের ১০৭৭টি পঞ্চায়েত নির্মল পঞ্চায়েত হিসেবে কেন্দ্রীয় পুরস্কার পেয়েছে। কিন্তু আমরা রিপোর্ট পেয়েছি, এই গ্রামগুলির মধ্যেও এখনও প্রায় ১৪ লক্ষ পরিবার বাইরে শৌচকর্ম করেন। এই সমস্ত গ্রাম গুলিকে প্রকৃত নির্মল করাও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bankura swachh bharat abhiyan government employees
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE