Advertisement
১১ মে ২০২৪

অবশেষে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরল সিউড়ির স্কুলে

বিপুল পরিমাণ বিল বকেয়া থাকায় সিউড়ি আরটি গার্লস স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। আংশিক টাকা মিটিয়ে দেওয়ায় পাঁচ দিন পরে সোমবার থেকে ফের আলো জ্বলল ওই স্কুলের ক্লাসঘরগুলিতে। তবে, বিদ্যুৎ সংযোগে সমস্যা থাকায় শিক্ষিকাদের ঘর-সহ কিছু অংশ এখনও বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে আছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০১:২২
Share: Save:

বিপুল পরিমাণ বিল বকেয়া থাকায় সিউড়ি আরটি গার্লস স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। আংশিক টাকা মিটিয়ে দেওয়ায় পাঁচ দিন পরে সোমবার থেকে ফের আলো জ্বলল ওই স্কুলের ক্লাসঘরগুলিতে। তবে, বিদ্যুৎ সংযোগে সমস্যা থাকায় শিক্ষিকাদের ঘর-সহ কিছু অংশ এখনও বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে আছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৌ দাস গুপ্ত বলেন, “বিদ্যুৎ দফতরের বকেয়া বিল মেটানোর জন্য এ দিনই স্কুলের অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের কাছে চেক পাঠিয়ে ছিলাম। তিনি তাতে সই করার পরে আপাতত ৬০ হাজার টাকা মেটানো হয়েছে।” টাকার পাওয়ার পরে দুপুরেই কোম্পানির কর্মীরা বিদ্যুৎ সংযোগ জুড়ে দেন।

স্কুল ও কোম্পানি সূত্রের খবর, আরটি গার্লস স্কুলে দীর্ঘদিন ধরে কোনও পরিচালন সমিতি নেই। বদলে প্রশাসক হিসেবে সিউড়ি পশ্চিম চক্রের স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) কাকলি জোয়ারদার রয়েছেন। বিদ্যুতের বিল নিয়ে গত মাস পাঁচেক থেকেই সমস্যা চলছে। নির্দিষ্ট সময়ে জানুয়ারি মাসের বিল না মেটানোয় মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দু’দিন আগে অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারি স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয় রাজ্যবিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। কিন্তু পরীক্ষা থাকায় পরদিনই তা জুড়ে দেয়। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত কোম্পানি স্কুলে ১ লক্ষেরও বেশি টাকা বিল পাঠায়। কিন্তু প্রথমে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, ওই বিল ভুয়ো। খারাপ মিটার পরীক্ষা করে নতুন ভাবে বিল তৈরিরও দাবি জানান তারা। পাশাপাশি ওঠে কিস্তিতে বকেয়া বিলের টাকা মেটানোর দাবিও। যদিও কোম্পানি তাঁদের সেই দাবিকে পাত্তা দেয়নি। কোম্পানির সিউড়ি শাখার স্টেশন ম্যানেজার নীলাঞ্জনকুমার মণ্ডল বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষকে স্পষ্টই জানিয়ে দেওয়া হয়, মিটারে কোনও গণ্ডগোল নেই। ওই বিল ঠিকই আছে। তারপরও বকেয়া বিল না মেটানোয় গত ২১ ফেব্রুয়ারি ওই মিটারের লাইন কেটে দেওয়া হয়।” বিপাকে পড়ে তখন অবশ্য আরটি গার্লস স্কুল কর্তৃপক্ষ কোম্পানিকে বকেয়া বাবদ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে অবস্থা সামাল দেন। পরের দিনই সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই বিলের বাকি টাকা আর জমা না দেওয়ায় কোম্পানি ফের গত বুধবার স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। নীলাঞ্জনবাবু বলেন, “এ দিন স্কুল কর্তৃপক্ষ বকেয়ার কিছুটা (৬০ হাজার টাকা) জমা দেওয়ায় লাইন জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ওঁরা বাকি টাকা ১২টি কিস্তিতে মিটিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছেন। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি, বকেয়া বাকি টাকা দু’টি কিস্তিতে মেটাতে হবে।”

কিন্তু স্কুলের একাংশে এখনও কেন বিদ্যুৎ নেই?

স্কুল সূত্রের খবর, ওই স্কুলে দু’টি পৃথক মিটার রয়েছে। বুধবার কোম্পানির কর্মীরা একটি মিটারের লাইন কেটে দেন। ওই মিটার থেকে যে সব ক্লাসঘর বিদ্যুৎ সংযোগ পেত সেখানকার আলো-পাখা বন্ধ হয়ে যায়। মৌদেবীর দাবি, “ওই সময়ই কেউ কেউ ক্ষুব্ধ হয়ে চালু মিটারটির তার ছিঁড়ে দেয়। ফলে এই মিটারে যুক্ত থাকা কয়েকটি ক্লাসঘর, শিক্ষিকাদের ঘর ও অফিসঘরের আলো-পাখাও বন্ধ হয়ে যায়।” কারা ওই কাজ করেছে তা স্পষ্ট না করলেও প্রধান শিক্ষিকা জানিয়েছেন, দ্বিতীয় মিটারটি ঠিক করতে বিদ্যুতের মিস্ত্রির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই সেটিও চালু হয়ে যাবে। তবে, কোম্পানি দুই কিস্তিতে টাকা মেটাতে বললেও বিল নিয়ে এখনই হাল ছাড়তে নারাজ স্কুল কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে মৌদেবী জানিয়েছেন। এ দিকে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় গত কয়েক দিন ধরেই স্কুলের পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছিল। এ দিনের পরে ফের তা স্বাভাবিক হবে বলেই মনে করছেন অভিভাবকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rt girls school siuri electricity connection
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE