Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

খোঁজ মিলল হায়দরের, দাবি আটকে রেখেছিল কাশ্মীর-পুলিশ

ঈদের রাতে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল তাঁদের। তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বীরভূমের নয়াগ্রামের জুলফিকার শেখ কিংবা হায়দর আলির খোঁজ মেলেনি। সেই উত্‌কণ্ঠার অবসান হল। ২৪ দিন পরে জম্মু কাশ্মীরে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যাওয়া ওই যুবকের সন্ধান পেল তাঁদের পরিবার। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই যুবক বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছেন, আদালতে না তুলে পুলিশ তাদের বারামুলা থানাতেই আটক করে রেখেছিল এত দিন।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
মুরারই শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৩৯
Share: Save:

ঈদের রাতে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল তাঁদের। তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বীরভূমের নয়াগ্রামের জুলফিকার শেখ কিংবা হায়দর আলির খোঁজ মেলেনি।

সেই উত্‌কণ্ঠার অবসান হল। ২৪ দিন পরে জম্মু কাশ্মীরে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যাওয়া ওই যুবকের সন্ধান পেল তাঁদের পরিবার। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই যুবক বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছেন, আদালতে না তুলে পুলিশ তাদের বারামুলা থানাতেই আটক করে রেখেছিল এত দিন।

বারামুলা থানা অবশ্য আগেই দাবি করেছিল, পুলিশি হেফাজত থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে খাগড়াগড়ের সুতোয় জড়িয়ে যাওয়া জুলফিকার ও হায়দরকে। ফোনে দেওয়া ওই দুই যুবকের বয়ানেও অবশ্য কিঞ্চিত্‌ অসামঞ্জস্য রয়েছে বলে মনে করছেন জেলা পুলিশ। তবে দুই ছেলের খোঁজ মেলায় মুরারাইয়ের ওই গ্রামে স্বস্তি ফিরেছে।

ওই দুই যুবক জানান, তাঁদের জম্মু কাশ্মীর পুলিশ কোনও আদালতে না তুলে ২৪ দিন ধরে আটক করে রেখেছিল। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁদের বারামুলা থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে বছর কয়েক ধরেই জম্মু-কাশ্মীরের বারামুলায় ছিলেন বীরভূমের ওই অজ গ্রামের জুলফিকর শেখ আর হায়দর আলি। ঈদের রাতে তাঁদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। টেনে হিঁচড়ে পুলিশের জিপে তুলে নেওয়া হয়েছিল জুলফিকরের ভাই রবিউলকেও। কেন? জঙ্গি মোকাবিলায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের বিশেষ বাহিনী ‘কার্গো পুলিশ’-এর দাবি ছিলবর্ধমান বিস্ফোরণে যোগ রয়েছে তাঁদের। জঙ্গি প্রতিরোধে কাশ্মীরের ওই বিশেষ পুলিশ বাহিনি সূত্রে দাবি, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরের দিনই এনআইএ-র একটি দল কাশ্মীরে আসে। স্থানীয় পুলিশ কর্তাদের কাশ্মীরের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে তার হদিস করতে বলেন তাঁরা। খোঁজ নিয়ে স্থানীয় পুলিশ জানতে পারে মোবাইলের ওই সিমটি কেনা হয়েছিল জুলফিকার শেখের নামে। সেই সূত্রেই জুলফিকারদের বর্ধমান-যোগ। পুলিশি হেফাজতে তাঁদের উপরে নির্যাতনেরও অভিযোগ করেছেন জুলফিকার।

পুলিশি জেরায় জুলফিকার বলেন, “রাজমিস্ত্রির কাজ করতে বর্ধমান থেকে ফারুখ নামে এক যুবক কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। মোবাইলের ‘লোকাল সিম’ জোগাড়ের জন্য সে আমার নাম এবং ভোটার কার্ড ব্যবহার করেছিল। ঠিকানাও দিয়েছিল আমার ভাড়া বাড়ির। পুলিশ সেই ফারুখকে খুঁজতে গিয়েই আমাকে ধরে।” জুলফিকারের দাবি, ২৯ সেপ্টেম্বর বারামুলার কানিশপুরা থেকে বাড়ি ফিরে যায় ফারুখ। তারপরে তার সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ নেই তাঁর।

ঘটনার পর থেকে ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন সিপিআই(এমএল)-এর রাজ্য কমিটির সদস্য মলয় তিওয়ারি। তাঁর অভিযোগ, “এনআইএ-র নির্দেশে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে জুলফিকার ও হায়দরকে আটকে রেখেছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

apurba chattopadhyay murarai haider
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE