গাছে ঝোলানো হয়েছে পোস্টার। বোঙাবাড়িতে।—নিজস্ব চিত্র।
উচ্ছেদ অভিযান চলছেই। এলাকার অবৈধ মদের ঠেকগুলির বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার পাশাপাশি এ বার জরিমানার হুমকিও দিলেন পুরুলিয়া ২ ব্লকের বোঙাবাড়ি এলাকার আন্দোলনকারী মহিলারা।
এই এলাকার একাধিক পাড়ায় বেআইনি মদ ও চোলাই ঠেকের রমরমা বাড়ায় গত এক মাসে একাধিকবার পথে নেমে অভিযান চালিয়েছেন স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। মাহালিপাড়া মহিলা সমিতি নামে এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের অভিযোগ, তাঁদের লাগাতার আন্দোলনের পরেও দু-একটি বেআইনি মদের ঠেক চলছে। এ বার এলাকায় পোস্টার দিয়ে মদ বিক্রি করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মহিলারা। পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে যে বা যাঁরামদের ঠেক চালাচ্ছেন, হোটেল বা দোকানে অবৈধ ভাবে মদ ও মাদক দ্রব্য বিক্রি করছেন, তাঁদের কাছে অনুরোধ মদ বিক্রি করবেন না। নতুবা আমরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য থাকব।’ অন্যথা হলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য কল্যাণী রজক, বিরতি মাহালি, বুলু মাহালিদের অভিযোগ, “এলাকায় গরিব মানুষের বাস। কেউ রিকশা বা ভ্যান চালান, কেউ বা দিনমজুরি করেন। যা আয় হয়, তার একটা অংশ মদের ঠেকগুলিতে গিয়েই খরচ করেন বাড়ির পুরুষেরা। ফলে ঘরে নিত্য অশান্তি হচ্ছে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়াতেই আমরা রাস্তায় নেমেছি।” কল্যাণী মাহাতো নামে এক সদস্যের কথায়, “কিছুদিন আগে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ও নিজেও নেশাসক্ত ছিল। তাই আমিও পথে নেমেছি।” বোঙাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা, পুরুলিয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নমিতা গরাঁই বলেন, “আমরা ওঁদের আন্দোলনের পাশে রয়েছি। দিনে দিনে পরিবেশ যেভাবে বিষাক্ত হয়ে পড়ছিল, প্রতিবাদ প্রয়োজন ছিল।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনন্দ রাজোয়াড় বলেন, “আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। এই গোষ্ঠীর মহিলাদের যদি প্রশাসনিক বা আইনি সহায়তা লাগে, আমরা তার ব্যবস্থা করব।” স্থানীয় রাঘবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহাদেব মাহাতো জানান, অনেক জায়গাতেই বেআইনি মদের ঠেকগুলি বন্ধ হয়েছে। একটি বা দু’টি হয়তো চলছে। আবগারি দফতরকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে। জেলা আবগারি দফতরের আধিকারিক বিকাশ বিশ্বাস জানান, ওই এলাকায় আগেও অভিযান হয়েছে। ফের অভিযান চালানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy